Bangladesh
সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মূলমন্ত্র ‘বিশ্বাস’: রাজীব কুমার
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৭ অক্টোবর ২০২৩: ‘কাজের স্বাধীনতা, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড যাই বলেন না কেন, বিষয় একটিই- সেটি হলো বিশ্বাস। সম্প্রতি ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ভোট হয়েছে। সেখানে সরকারি দল কিছু জায়গায় সামান্য ভোটে পরাজিতও হয়েছে। কিন্তু কেউ কোনো পরাজয় নিয়ে প্রশ্ন করেনি। এটাই বিশ্বাস।’
সোমবার বিকেলে ভারত সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়ে একথা বলেন দেশটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলোই তাদের দর্শন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত তথ্য উন্মুক্ত করা বা প্রকাশ করা। নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য যে কোনো কার্যক্রম রাজনৈতিক দল এবং মিডিয়ার কাছে প্রকাশ করতে হবে, যেন তাদের মনে কোনো সন্দেহ না থাকে।’
‘কোনো বুথ স্থাপন কিংবা কোনো নির্বাচনী নিয়ম-নীতি জারি করতে গেলে সবাইকে নিয়ে করতে হবে। সব দলের কাছে পৌঁছাতে হবে। সংযোজন, সংশোধন, বিয়োজন সবকিছু জানাতে হবে। প্রত্যেক প্রক্রিয়া সবাইকে অবহিত করতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া যদি শতভাগ স্বচ্ছ হয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।’
নির্বাচন নিয়ে কারও প্রশ্নের সঠিক জবাব দেওয়া যায় স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার মাধ্যমে। কোনো প্রার্থী তার অসন্তুষ্টি নিয়ে আদালতেও যেতে পারেন। কমিশনের দায়িত্ব আদালতে তাদের সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা তুলে ধরে অভিযোগকারী ব্যক্তিকে সন্তুষ্ট করা।
ভারতের নির্বাচন কমিশন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সবার কাছে আস্থাশীল। এটি একদিনে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের প্রমাণ করতে হয়েছে। এখন মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
নির্বাচন সম্পন্ন করার চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৮ বছরের বেশি সবাইকে আমরা ভোটার করতে চাই। আমরা বাড়ি গিয়ে গিয়ে তাদের ভোটার করার কার্যক্রম শুরু করেছি। এমনকি ট্রান্সজেন্ডারদেরও ভোটার করা হচ্ছে। একটি দ্বীপে একজন ভোটার থাকলেও আমরা সেখানে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। এটাও ভোটের একটা অন্যতম চ্যালেঞ্জ।’
রাজীব কুমার বলেন, ‘এই মুহূর্তে যে কোনো নির্বাচন ব্যবস্থাপকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়।’
নির্বাচন আরও প্রাণবন্ত, বিশ্বাসযোগ্য করার জন্য প্রযুক্তিগতভাবে এগিয়ে নেওয়ায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। এরই মধ্যে ভোটার হেল্প লাইন অ্যাপ, ভোটার টার্ন আউট অ্যাপ, ভোটার পোর্টাল, পলিটিক্যাল পার্টি অ্যান্ড ট্র্যাকিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, বুথ অ্যাপ প্রভৃতি নিয়ে কাজ করা হচ্ছে বলে জানান সিইসি।
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা ৪০ বছর হলো ইভিএম ব্যবহার করছি। আমাদের ইভিএম মেশিনগুলো নির্বাচনের ছয় মাস আগে পলিটিক্যাল পার্টির নেতারা চাইলে যাচাই করতে পারেন। ঠিক সেই মেশিন নির্দিষ্ট কেন্দ্র ও নির্দিষ্ট বুথে বসানো হয়। সেটা বসানো হলো কি না সেটাও চেক করা যায়। মেশিনগুলোর ব্যাটারি স্থায়ীভাবে চার্জ করা। তাই তথ্য জমা রাখতে কোনো সমস্যা হয় না কিংবা ভোটগ্রহণের সময় কোনো সমস্যা করে না।’