Bangladesh
অসহায় রোহিঙ্গাদের কথা মানবিকতার খাতিরে মাথায় রাখছে বাংলাদেশ সরকার
মানবিকতার কথা মাথায় রেখে এই মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
ঠিক এমনটাই বোঝা গেছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মুখের এক কথায়।
উনি দেশের মানুষকে বলেছেন যে সহিংসতার কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা ও রোহিঙ্গা শিশুদের দুর্ভোগের কথা ভেবে সোমবার রাতে স্বাভাবিক ঘুম হয়নি।
আর এই উক্তি থেকেই বোঝা যায় কিভাবে এই দেশের সরকার।
অসহায় মানুষদের পাশে আছে বাংলাদেশের নেতারা।
তাদের দুঃখে কষ্ট হয়ে মানুষদের।
ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের আজ কাদের বলেছেনঃ "এখন নেতা-কর্মীদের একটাই কাজ, চরম বিপন্ন রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানো।"
সোমবার বৃষ্টিভরা রাতে মানুষদের কি হবে সেই বিষয় ভেবে কষ্ট পেয়েছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন শিশুদের দুর্ভোগের কথা ভেবে স্বাভাবিক ঘুম হয়নি ওনার।
মন্ত্রী আরও বলেন যে ত্রাণ নিতে আসা রোহিঙ্গাদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে হতাশ হয়েছেন উনি।
এই মুহূর্তে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গার পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে চলেছে।
মিয়ানমার সরকারকে নিজেদের দেশের মানুষদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বার বার বাংলাদেশ আহ্বান করলেও ফল হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এই সমস্যার বিষয় বহুবার মুখ খুলেছেন।
শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে আছেন নিউ ইয়র্কে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে গেছেন হাসিনা।
শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিজের বক্তব্য তুলে ধরবেন এই মঞ্চে।
এই মঞ্চে, বিশ্বনেতাদের সামনে হাসিনার রোহিঙ্গা সঙ্কটের ‘মূল কারণগুলো’ তুলে ধরবার কথা আছে।
এই সমস্যা নিরসনে বাংলাদেশের প্রস্তাব সামনে তুলে দেবেন হাসিনা।
মানবিকতার কথা মাথায় রেখে বাংলাদেশের মানুষ আজ স্থান দিয়েছে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের।
এখন এক্মন এক পরিস্থিথি হয়েছে দেশে যেখানে দেখা যাচ্ছে বহু রোহিঙ্গা মানুষ এসে বাংলাদেশের মাটিতে স্থান নিয়েছেন।
মিয়ানমারকে বার বার ফিরিয়ে নিতে বলা হলেও সেই বিষয় সাড়া দিচ্ছেনা তারা।
এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও মিয়ানমারের উপরে আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করবার চেষ্টা করছেন এই মানুষদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য।
দেশের মাটি থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এইবার মিয়ানমারের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ফ্রান্সের সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্ট বঙ্গভবনে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে গেলে ওনাকে এই কথাগুলি বলেন হ্রিহস্পতি রাষ্ট্রপতির সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেছিলেন অবার্ট।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের আজকের বৈঠকের বিষয় বলেনঃ "বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়ার পরেও শুধুমাত্র মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়েছে।"
"রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে রাষ্ট্রপতি এসময় মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগে ফ্রান্সের সহযোগিতা চান," উনি আরও বলেন।
গত ২৫ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা মানুষ এই দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
তারা মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পরে এই দেশে পালিয়ে এসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার আরেকবার মিয়ানমারকে এই দেশে পালিয়ে আসা নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
উনি বলেন যে রোহিঙ্গারা এই দেশে নিজেদের ঘর বাড়ি হারিয়ে এসেছেন তারা 'সাময়িক আশ্রয়' পাবেন।
"স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। ঘরবাড়ি হারিয়ে যেসব রোহিঙ্গা এখানে এসেছেন, তাঁরা সাময়িক আশ্রয় পাবেন," হাসিনা বলেন।
তবে, প্রধানমন্ত্রী তাদের জানিয়ে দেন দেশে ফিরতে হবে।
"তাঁদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে," হাসিনা বলেন।
"আপনারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে," প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই মানুষদের উদ্দেশ্যে।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে আজ এই মানুষদের অবস্থা দেখতে গেছিলেন হাসিনা।
সেই সময় এই কথাগুলি উনি বলেছেন।
"‘মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা আপনাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা আপনাদের পাশে থাকব," হাসিনা বলেন।
হাসিনা রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করেছেন।
অন্যদিকে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে ওনার সরকার।
বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই কথাগুলি বলেছেন স্বরাজ।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব নজরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে এই বিষয় জানিয়েছেন।
ভারতের মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে উনি বলেনঃ "রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের যে অবস্থান, ভারতেরও একই অবস্থান।”
"তারা (মিয়ানমার) যেন তাদের শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়, সেজন্য ভারতের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চাপ সৃষ্টির কথাও বলেছেন উনি (সুষমা)," উনি বলেন।
রোহিঙ্গাদের উপরে নির্যাতন বন্ধ করবার ক্তহাও বলেন উনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের মন্ত্রীকে বলেন যে মিয়ানমার থেকে আসা মানুষদের শুধু মাত্র মানবিকতার কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।