Bangladesh
কক্সবাজারে বন্যায় ১৪ জনের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১১ আগস্ট ২০২৩ : বৃষ্টিপাত বন্ধ হওয়ায় নদীতে কমে এসেছে বৃষ্টি ও বানের জল। পানি কমছে চকরিয়া-পেকুয়ার ১৯টি ইউনিয়ন ও রামুসহ প্লাবিত নিম্নাঞ্চল থেকে। পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেসে উঠছে মহাসড়ক, উপসড়ক, কাঁচারাস্তা ও বাঁধের ক্ষতচিহ্ন। কালভার্ট ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে অনেক এলাকা। ঢল আর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়া গ্রামীণ জনপদে নষ্ট হয়েছে কৃষকের বীজতলা, ফসলের মাঠ, মাছের ঘের ও বেড়িবাঁধ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ঘরবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ক্ষতির মুখে পড়েছে রেললাইন।
বৃষ্টিতে পাহাড়ধস, সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে, সাপের কামড় আর পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে শিশুসহ ১৪ জনের। পানি নামার পর আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফেরা মানুষগুলো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়েছেন। যদিও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেই ত্রাণ দুর্গতদের কাছে পৌঁছেনি বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। চারদিন পর কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে, আজ শুক্রবার সকালে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শনে আসছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান। জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় ৬০টি ইউনিয়নে চার লাখ ৭৯ হাজার ৫০৩ জন বন্যার কবলে পড়েন। চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় ১৬২টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ আশ্রয় নেন। এসব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের পাশাপাশি ৩৭ হাজার ৫০০টি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়। মজুত রয়েছে আরও ৫০ হাজার। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৯ কিলোমিটার সড়ক-উপসড়ক। এখনো বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পেকুয়ার ছয়টি এবং চকরিয়ার ১৩টি ইউনিয়ন। প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি সাড়ে ৪০ লাখ টাকা। পানি কমে গেলে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী মনজুুর আলম বলেন, বন্যার সময় দুর্গতের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা চ্যালেঞ্জ। আমরা এ পর্যন্ত ৩৭ হাজার ৫০০টি পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, ২০০টি পানিসহ জেরিকেন এবং ৫০০০ লিটার পানি সরবরাহ করেছি। আরও ৫০ হাজার ট্যাবলেট আমাদের মজুত রয়েছে। কক্সবাজারের পাশাপাশি বান্দরবানকেও আমাদের সাপোর্ট দিতে হচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে পেকুয়া ও চকরিয়ায় পাঁচ শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পেকুয়া উপজেলায় তিনজন ও চকরিয়ায় দুজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এছাড়া বানের পানি নেমে গেলে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়া সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে গ্যাসের বিষক্রিয়ায় বাবা ও তার দুই ছেলের মৃত্যু হয়েছে।