Bangladesh
করোনা চিকিৎসায় জড়িত ২৩ শতাংশ স্বাস্থ্যকর্মী মানসিক রোগের শিকার
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৭ মে ২০২২: দেশে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ মানসিক রোগে ভুগেছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা ছিল চিকিৎসকদের। সরকারি একটি গবেষণায় এ তথ্য ওঠে এসেছে।
গবেষণা করে জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান (নিপসম)। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশে কোভিড-১৯ মহামারিকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের ওপর মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব, কুশলবস্থা, সংশ্লিষ্ট ফ্যাক্টরসমূহ ও মানিয়ে নেওয়ার কৌশল’।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) রাজধানীর মহাখালীর নিপসম মিলনায়তনে এই জরিপের ফল প্রকাশ হয়। সেখানে বলা হয়, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় থাকা স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারে (পিটিএসডি) ভুগছিলেন।
পিটিএসডি হলো মানসিক একটি অবস্থা। কোনো আঘাত বা দুশ্চিন্তাজনক ঘটনার সাক্ষী থাকার কারণে এটি হতে পারে। এর লক্ষণের মধ্যে রয়েছে পুরোনো কথা মনে পরা, দুঃস্বপ্ন, উদ্বেগ ও ঘটনা সম্পর্কে নিয়ন্ত্রণহীন চিন্তা। এছাড়া পিটিএসডিতে ভোগা মানুষ পরিবার বা অন্য সবার থেকে দূরে থাকে। কখনো চাকরি ছেড়ে দিতে পারে। তবে সবচেয়ে ভয়াবহ হলো আত্মহত্যার প্রবণতা।
গবেষণায় ওঠে এসেছে, করোনার সময় স্বাস্থ্যসেবায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছিলো চিকিৎসকদের। এরপর রয়েছে, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও নার্স।
পিটিএসডিতে ভোগার মধ্যে চিকিৎসক ২৪ দশমিক ৩০ শতাংশ, টেকনোলজিস্ট ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং নার্স ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ ছিল।
গবেষণা দলের প্রধান নিপসম’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ এ ফলাফল তুলে ধরেন।
গবেষণাটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে করা হয়। যা পরিচালিত হয় এক হাজার ৩৯৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর। তাদের মধ্যে ছিলেন ৫৯৬ জন চিকিৎসক, ৭১৩ জন নার্স এবং ৮৫ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। এসব স্বাস্থ্যকর্মীরা অন্তত এক মাস করোনা রোগীদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন জরিপ কর্মীরা।
জরিপে দেখা গেছে, নারীদের পিটিএসডি’র ঝুঁকি ছিল বেশি। যাদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশেরই পিটিএসডি ছিল। এর মধ্যে ৮৩ দশমিক ৬ শতাংশ ছিলেন বিবাহিত। স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের কাজের চাপ ছিল অনেক বেশি। তারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সামগ্রীর (পিপিই) অপ্রতুলতায় ছিলেন। এছাড়া ছিলেন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে।