Bangladesh
কক্সবাজারে বন্যায় তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৯ আগস্ট ২০২৩ : টানা পাঁচ দিনের ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের ৯টি উপজেলার ৬০টি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের অন্তত তিন লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ডুবে আছে রাস্তাঘাট ও বসতবাড়ি। এসব এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বন্যাদুর্গতদের।
মাতামুহুরী, বাঁকখালী ও ঈদগাঁও ফুলেশ্বরী নদীর একাধিক অংশে বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ডুবে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। প্রাথমিক হিসাবে ৫১ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক এবং আড়াই কিলোমিটার মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একই সঙ্গে মেরিন ড্রাইভ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টসহ উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে।
এদিকে সড়ক তলিয়ে থাকায় মঙ্গলবার সকাল থেকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম সড়কে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
আবহাওয়া অফিসের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্র জানায়, রোববার বিকেল ৩টা থেকে সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে। সোমবার ১২টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৯৩ মিলিমিটার। আরও কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, ভারী বর্ষণের কারণে দোহাজারী হাইওয়ে থানার চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের হাশিমপুর কসাইপাড়া, পাঠানীপুল, দোহাজারী পৌরসভার কলঘরব্রিজ এলাকায় রাস্তার উপর প্রায় আড়াইফুট এবং সাতকানিয়ার কেউচিয়ার নয়াখাল, নতুন রেললাইন, কেরানীহাটবাজার এবং ছদাহার হাসমতের দোকান এলাকায় মহাসড়কের ওপর দিয়ে একফুটের বেশি পানি উজান থেকে ভাটির দিকে প্রবাহিত হলে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। কিছু বড় যান ধীরগতিতে চললেও ছোট ও মাঝারি যান চলাচল বন্ধ থাকে। এর আগে সোমবার থেকে বান্দরবান সড়কের বাজালিয়া এলাকায় পানি উঠে কক্সবাজার-চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ হয়।
সামুদ্রিক জোয়ারের ঢেউতে মেরিনড্রাইভ, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা পয়েন্ট, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় ভাঙন অব্যাহত আছে। মেরিনড্রাইভের কিছু অংশে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নতুন করে আরও কয়েকটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
সোমবার রাতে টানা বৃষ্টিতে শহরের পর্যটন জোনের প্রধান ও উপসড়কে এক-দেড়ফুট পানি প্রবাহিত হয়। অনেক হোটেলের নীচতলায় পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সৈতকপাড়ায় অনেক বাসাবাড়িতেও পানি ঢুকেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। একই অবস্থা পাহাড়তলী, লাইটহাউজ, রহমানিয়া মাদরাসা এলাকায়ও।