Bangladesh
শেখ হাসিনা- সুষমা স্বরাজ সাক্ষাৎ করলেন নিউ ইয়র্কে
এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে নিউ ইয়র্ক শহরে।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে দুজনেই এই মুহূর্তে সেই দেশে আছেন।
তবে, এই বৈঠকে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান সহিংসতার জেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বিষয় কথা হয়নি, সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে।
এই বৈঠকের বিষয়, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার টুইট করে জানিয়েছেনঃ "ইএএম (পররাষ্ট্রমন্ত্রী) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেছেন।"
দুই নেত্রীর একসাথে ছবিও উনি নিজের টুইটারে পোস্ট করেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে সমর্থন দেবে ওনার সরকার।
বৃহস্পতিবার রাতে টেলিফোনে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এই কথাগুলি বলেছেন স্বরাজ।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেসসচিব নজরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে এই বিষয় জানিয়েছেন।
ভারতের মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে উনি বলেনঃ "রোহিঙ্গা নিয়ে বাংলাদেশের যে অবস্থান, ভারতেরও একই অবস্থান।”
"তারা (মিয়ানমার) যেন তাদের শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়, সেজন্য ভারতের পক্ষ থেকে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক চাপ সৃষ্টির কথাও বলেছেন উনি (সুষমা)," উনি বলেন।
রোহিঙ্গাদের উপরে নির্যাতন বন্ধ করবার কথাও বলেন উনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের মন্ত্রীকে বলেন যে মিয়ানমার থেকে আসা মানুষদের শুধু মাত্র মানবিকতার কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
ভারতের হাই কমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা আগে রোহিঙ্গাদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী হস্তান্তর করেন।
দেশের মাটি থেকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য এইবার মিয়ানমারের সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে ফ্রান্সের সহযোগিতা চেয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ।
ঢাকায় নিযুক্ত ফরাসি রাষ্ট্রদূত সোফি অবার্ট বঙ্গভবনে আজ রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে গেলে ওনাকে এই কথাগুলি বলেন হামিদ।
আজ রাষ্ট্রপতির সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করতে গেছিলেন অবার্ট।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের আজকের বৈঠকের বিষয় বলেনঃ "বৈঠকে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, বাংলাদেশ জনবহুল দেশ হওয়ার পরেও শুধুমাত্র মানবিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়েছে।"
"রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত নিতে রাষ্ট্রপতি এসময় মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগে ফ্রান্সের সহযোগিতা চান," উনি আরও বলেন।
গত ২৫ অগাস্ট থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা মানুষ এই দেশে আশ্রয় নিয়েছেন।
তারা মিয়ানমারে সহিংসতার মুখে পরে এই দেশে পালিয়ে এসেছেন।
আজকের বৈঠকের সময় রাষ্ট্রপতি আসা করেছেন যে বাগামি দিনে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য-বিনিয়োগ বাড়বে।
নিজের দায়িত্ব সাফল্যের সাথে শেষ করবার জন্য বিদায়ী দূতকে অভিনন্দন জানিয়েছেন হামিদ।
সার্বিক সহযোগিতার জন্য রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ফ্রান্সের বিদায়ী দূত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার আরেকবার মিয়ানমারকে এই দেশে পালিয়ে আসা নিজেদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
উনি বলেন যে রোহিঙ্গারা এই দেশে নিজেদের ঘর বাড়ি হারিয়ে এসেছেন তারা 'সাময়িক আশ্রয়' পাবেন।
"স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। ঘরবাড়ি হারিয়ে যেসব রোহিঙ্গা এখানে এসেছেন, তাঁরা সাময়িক আশ্রয় পাবেন," হাসিনা বলেন।
তবে, প্রধানমন্ত্রী তাদের জানিয়ে দেন দেশে ফিরতে হবে।
"তাঁদের মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে," হাসিনা বলেন।
"আপনারা যাতে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে চেষ্টা চলছে," প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এই মানুষদের উদ্দেশ্যে।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে আজ এই মানুষদের অবস্থা দেখতে গেছিলেন হাসিনা।
সেই সময় এই কথাগুলি উনি বলেছেন।
"মানবিক দিক বিবেচনা করে আমরা আপনাদের আশ্রয় দিয়েছি। আমরা আপনাদের পাশে থাকব," হাসিনা বলেন।
হাসিনা রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণসামগ্রীও বিতরণ করেছেন।
Image: Raveesh Kumar Twitter page