Bangladesh
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় প্রস্তুত হচ্ছে ৫০ কোচ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২২: মহামারি করোনার কারণে গত দুই বছর ঈদে গ্রামের বাড়িতে যেতে পারেননি অনেকে। এবার পরিস্থিতি বদলেছে। করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফলে এবারের ঈদুল ফিতরে সড়কের পাশাপাশি রেলপথে থাকবে ঘরমুখো মানুষের চাপ। এ কারণে নানা সংকটের মধ্যেও অনেকটা জোড়াতালি দিয়ে ঈদযাত্রার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
প্রয়োজনের মাত্র ২৫ শতাংশ জনবলের পাশাপাশি বাজেট স্বল্পতা নিয়ে এবারের ঈদযাত্রায় ৫০টি বগি সংযুক্ত করতে যাচ্ছে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। নষ্ট ও চলাচল অযোগ্য বগিগুলোকে সচল করে তুলছেন কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীরা। চরম কর্মব্যস্ততায় সময় কাটছে তাদের।
জানা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় পুরোনো বগিকে নতুন করার কাজ চলে আসছে ব্রিটিশ আমল থেকে। ব্রিটিশ সরকার ১৮৭০ সালে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাটি স্থাপন করে। সেই সময় সৈয়দপুর কারখানায় কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকের সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ হাজারের মতো। ধীরে ধীরে জনবল কমে যাওয়ার পরও এ কারখানায় প্রতিদিন একটি কোচ ও একটি ওয়াগন মেরামত করা হয়। এছাড়া রেলওয়ের নানা ধরনের যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয় এখানে। প্রয়োজনের মাত্র ২৫ শতাংশ জনবল নিয়ে কাজ হচ্ছে কারখানাটিতে। কারখানার যান্ত্রিক শাখায় ২ হাজার ৮৫৯ জনবলের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ৬৯১ জন। বৈদ্যুতিক শাখায় ৩৩৭ জনবলের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন ১৪৮ জন।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার জিওএইচ, উৎপাদন মেশিন শপ, ক্যারেজ শপ, হুইল শপ, বগি শপ ও সিএইচআর শপ ঘুরে দেখা গেছে, চলছে নষ্ট হয়ে যাওয়া বগি মেরামত। কেউ ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ, কেউবা ব্যস্ত চাকা মেরামতে। আবার কেউ ওয়েল্ডিং ও কোচের সিট মেরামতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কোথাও আবার মেরামত করা বগিকে নতুন করে রং লাগিয়ে চকচকে করে তোলা হচ্ছে। যেন দম ফেলার সময় নেই তাদের। তীব্র জনবল সংকটের মধ্যেও সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করছেন শ্রমিকরা। তাদের অভিযোগ- পর্যাপ্ত জনবল ও কিছু সংখ্যক কাঁচামালের অভাবে পুরো কর্মযজ্ঞ কিছুটা বাধাগ্রস্ত।
মেরামতকৃত এসব কোচ দিয়ে ঢাকা-খুলনা, ঢাকা-পার্বতীপুর রুটে দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে। আর বাকি কোচ অন্যান্য ট্রেনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। রেলবহরে বাড়তি কোচগুলো যুক্ত হলে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাপথের ভোগান্তি কিছুটা হলেও লাঘব হবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।