Bangladesh
কানাডীয় টিভিকে ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছে বঙ্গবন্ধুর খুনী
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২১ নভেম্বর ২০২৩: বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সরাসরি গুলি করে হত্যার দায়ে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী কানাডার সিবিসি টিভি নেটওয়ার্কের প্রশ্নের মুখে পালিয়ে গেল। কানাডিয় জাতীয় টেলিভিশন হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা এবং কানাডিয় কর্মকর্তাদের কাছে নিজের সুরক্ষার জন্য সে যে গল্পটি বলেছিল সেটি সম্পর্কে তার মন্তব্য জানতে চাইছিল।
‘স্যার, আমরা যদি পারতাম। . . . শুধু দ্রুত কিছু কথা বলতে . . . আমি শুধু জানতে চাই যে হত্যাকাণ্ডে আপনার ভূমিকা সম্পর্কে আপনি কানাডিয়দের সাথে সত্য কথা বলেছেন কিনা,’ একজন সিবিসি টিভি সাংবাদিককে একটি সাদা এসইউভি গাড়িতে থাকা কাউকে জিজ্ঞাসা করতে দেখা যায়, যে গাড়িটি তখন চলতে শুরু করেছে।
লোকটি পলাতক আসামিদের অন্যতম, বরখাস্তকৃত মেজর নূর চৌধুরী। সিবিএস টিভির অনুসন্ধানী সাংবাদিক মার্ক কেলি তাকে এমন একজন হিসেবে বর্ণনা করেছেন যিনি কানাডাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন। তিনি গত ২৭ বছর ধরে কানাডায় বসবাস করছেন। সিবিএস টিভি সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে, হত্যাকারীকে বলতে শোনা যায় ‘মাত্র এক সেকেন্ড, মাত্র এক সেকেন্ড, আমার একটি (অস্পষ্ট বিড়বিড়)’ এবং তারপরে সে তাড়াহুড়ো করে গাড়িটি চালিয়ে চলে যায়।
প্রতিবেদনে টরন্টোর একটি অ্যাপার্টমেন্টের বারান্দায় তাকে এক ঝলক দেখানোও হয়েছে। সেই সময়ে কেলি এবং তার সহকর্মীকে নূরের গাড়ির পিছনে তাকে থামাতে এবং কথা বলতে রাজি করাতে কয়েক পা ছুটে যেতে দেখা যায়। তারপর উপস্থাপক মন্তব্য করেন ‘কানাডায় ২৭ বছর অবাধে বসবাস করার পরে মনে হয় তার আর নতুন কিছু বলার নেই।’
বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করে আবার ক্ষমতায় আসার পর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের চক্রান্তকারীদের বেশিরভাগ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। তখন পর্যন্ত তারা একটি কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইনের কারণে বিচার থেকে রেহাই পেয়ে আসছিল। নূর কানাডায় আশ্রয় নিয়ে সেখানে নিরিবিলি জীবনযাপন করছে। বছরের পর বছর ধরে তার হদিস অজানাই ছিল।
সিবিএস টিভির জনপ্রিয় অনুসন্ধানী বিভাগ দ্য ফিফথ স্টেট দু'দিন আগে ‘অ্যাসাসিন নেক্সট ডোর বা খুনী পাশের ঘরে’ শিরোনামে ৪২ মিনিটের তথ্যচিত্রটি সম্প্রচার করে, যেখানে প্রশ্ন ছিল ‘কেন বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির হত্যাকারী কানাডায় মুক্ত?’
কয়েক বছর আগে কানাডিয় টিভি নেটওয়ার্ককে দেওয়া এক মন্তব্যে নূর অবশ্য বলেছিল, পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যসহ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সময় সে সেখানে ছিল না। ‘এটি সত্য নয়, আমি সেখানে ছিলাম না। আমি সেই জায়গার কাছাকাছি কোথাও ছিলাম না,’ টিভি পর্দায় তার ব্যক্তিগত উপস্থিতি এড়িয়ে এক অডিও মন্তব্যে সে এ কথা বলেছিল।