Bangladesh
পদ্মা সেতুর বছর পূর্তি আজ
ঢাকা, ২৫ জুন ২০২৩ : আজ ২৫ জুন, কেটি মানুষের আকাংখা পূরণ হয়েছিল পদ্মা সেতু চালুর মধ্য দিয়ে।
দক্ষিণের দুয়ার খোলার সেই মাহেন্দ্রক্ষণের এক বছর পূর্তি আজ। অনেক ষড়যন্ত্রের নাগপাশ ছিন্ন করা আশাজাগানিয়া সেতুটি আজ স্বাধীন বাংলাদেশের সক্ষমতার প্রতীক।
৬ দশমিক এক-পাঁচ কিলোমিটারের সেতুর চালু, বাঙালির মানমর্যাদা পৌছে দিয়েছিল অনন্য উচ্চতায়।
দীর্ঘ সময়ের অচলায়তন ভেঙ্গে এক সূতোয় বেধেছিল একটি সেতু। সেই রোমাঞ্চকর গল্প এখনও আলোচিত হয় বয়োবৃদ্ধ সবার মাঝে।
শুধু যাতায়াতকে সহজ ও নিরাপদ করেছে, এজন্য নয়। এ যে অর্থনৈতিক মুক্তির অন্যতম জিয়ানকাঠি। বড় প্রতিবন্ধকতা যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার অবসান হয়েছে। এখন, যতবেশি পরিকল্পিত বিনিয়োগ হবে, এই সেতুর তত বড় সুফল ঘরের তোলা সম্ভব। এমন মত অর্থনীতির বিশ্লষকরা।
মিসিং লিংক ছিল, এশিয়ান হাইওয়ে আর ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওর্য়াকের। অভ্যন্তরীণ যাতায়াত ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের দেশগুলোকে যুক্ত করে সূচনা করলো একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের।
একটা সময় ছিল যখন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল কঠিন। লঞ্চ বা ফেরি দিয়ে পার হতে হতো পদ্মা নদী।
এই নদী পার হতে গিয়ে বহু মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। ভোগান্তির কথা তো আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিশেষ করে ঈদযাত্রা ছিল যেন দুঃসহ স্মৃতি।
ফেরি বা লঞ্চ না পেয়ে ঈদে বাড়ি যাওয়া হতো না অনেকের। এছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যও ছিল কঠিন। ট্রাকেই নষ্ট হতো বিভিন্ন পণ্য। এসব এখন শুধুই স্মৃতি। এক পদ্মা সেতুই সব পাল্টে দিয়েছে। এখন আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা পথে অপেক্ষা করতে হয় না। কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া ঘাটের ভোগান্তির আতঙ্ক নেই। কম সময়ে সহজেই গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছে মানুষ। পণ্য পরিবহন, অ্যাম্বুলেন্সসহ এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে যেন গতি ফিরেছে।
এক বছর আগেও সাতক্ষীরা থেকে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ স্থাপনে একমাত্র বাধা ছিল পদ্মা নদী। পদ্মা সেতু চালুর পর আমূল পরিবর্তন এসেছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলা সাতক্ষীরার যোগাযোগ ব্যবস্থায়। সেতু চালুর আগে সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় যেতে ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা সময় লাগতো। ঘন কুয়াশা, ঝড়বৃষ্টি বা যেকোনো দুর্যোগ মুহূর্তে দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যেতো। শুধু সাতক্ষীরা নয়, দক্ষিণে-পশ্চিমের সব জেলার দূরত্ব কমে দাঁড়িয়েছে এক তৃতীংশ সময়ে।