Bangladesh
২০৫০ সালের মধ্যে দেশের ১৭ শতাংশ এলাকা তলিয়ে যাওয়ার আশংকা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ : বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘটে বৈশ্বিক নেতাদের কাছে সবচেয়ে ক্ষতিকর দেশগুলোর জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা। বিশ্বনেতারা এ ক্ষতিপূরণের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর কথা শুনবেন বলেও দাবি তাদের।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব জলবায়ু ধর্মঘট ২০২২’ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ’ আয়োজিত ধর্মঘটে তারা এ দাবি জানান। অন্য সব দেশের মতো বাংলাদেশেও বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট হয়।
এসময় বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনে শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশেরও কম অবদান রাখা সত্ত্বেও ১৮ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
তারা বলেন, বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের হিমবাহ ও মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে থাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে। এতে প্রাণঘাতী দুর্যোগের ঝুঁকিও বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে বন্যা, ঘুর্ণিঝড়, খরা, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন ও মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। এর ফলে দেশের দুই কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে। এছাড়া বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ২৭ শতাংশ মানুষ বর্তমানে বন্যার ঝুঁকিতে আছে। চলতি শতাব্দীতে উপকূলীয় বন্যার এ ঝুঁকি বেড়ে ৩৫ শতাংশ হতে পারে। বর্তমানে বন্যায় উপকূলীয় এলাকায় বছরে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি হয় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ।’
পরিবেশ ও জলবায়ুকর্মী এবং সেইভ ফিউচার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক নয়ন সরকার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিশ্বজুড়ে দৃশ্যমান। বর্তমানে আমরা মহাসংকটের মধ্যে রয়েছি, যেটা জলবায়ু সংকট। বিশ্বনেতারা জরুরিভাবে জলবায়ু পদক্ষেপ না নিয়ে সময় অপচয় করে জলবায়ু সংকট দীর্ঘ করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে গত ২০ বছরে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রতিটি পরিবারের গড়ে চার লাখ ৬২ হাজার ৪৯১ টাকা আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। আমরা ক্ষয়ক্ষতির অর্থ চাই এখনই। আমরা জলবায়ু পদক্ষেপ ও জলবায়ু সুবিচার চাই।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কর্মসূচি শুরু করে র্যালি নিয়ে শাহবাগ হয়ে রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শনীর মাধ্যমে ধর্মঘট শেষ করে সংগঠনটি।