Bangladesh
বাংলাদেশের চমৎকার অর্থনৈতিক সাফল্য বিশ্বকে উপকৃত করতে পারে: ভারতের রাষ্ট্রপতি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১: ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দ বলেছেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যা দেশের নাগরিকদের পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি করেছে। ভৌগোলিক সুবিধা ও বাংলাদেশের চমৎকার অর্থনৈতিক সাফল্য সমগ্র উপ-অঞ্চল ও বিশ্বকে উপকৃত করতে পারে। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি ক্রমবর্ধমান ধারণা রয়েছে, ঘনিষ্ঠ উপ-আঞ্চলিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সংযোগ স্বল্প সময়ের মধ্যে সোনার বাংলা গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ প্রতিপাদ্যে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যের শুরুতে রামনাথ কোবিন্দ বাংলায় বাংলাদেশের মানুষকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান। বক্তব্যের মাঝামাঝি তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার কয়েক চরণ আবৃত্তি করেন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মতো এত মহাকাব্যিক ত্যাগের সাক্ষী মানবসভ্যতায় খুব কমই হয়েছে।
'বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রতিটি ভারতীয়, বিশেষ করে আমার প্রজন্মের মানুষের হৃদয়ে একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। বুধবার সাভারে লাখো শহীদের স্মৃতিসৌধ ও বঙ্গবন্ধু জাদুঘর পরিদর্শন ছিল গভীর আবেগময় অভিজ্ঞতা। আমি বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণের সারাংশ শুনে বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি। এটি সর্বদা ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের চেতনাকে উদ্দীপিত করে। তাই ইউনেস্কো এই ভাষণকে বিশ্বতালিকায় ন্যায়সঙ্গতভাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।'
ভারতের রাষ্ট্রপতি বলেন, 'বাংলাদেশের সংগ্রাম ভারতে যে মাত্রায় সহানুভূতি ও তৃণমূল স্তরের সমর্থন লাভ করেছে তার পরিমাণও ইতিহাসে বিরল। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাংলাদেশের জনগণকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য তাদের হৃদয় দ্বার উন্মুক্ত করেছে। ভাইবোনদের প্রয়োজনের সময়ে তাদের সাহায্য করা আমাদের জন্য সম্মানের ও পবিত্র দায়িত্ব ছিল।'
তিনি বলেন, 'ইতিহাস সর্বকালে দুই দেশের বন্ধুত্বের এই অনন্য ভিত্তির সাক্ষ্য দেবে যে, গণযুদ্ধে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। সেই যুদ্ধের কয়েকজন সাক্ষী (ভারত ও বাংলাদেশ উভয়েরই) এখানে দর্শকদের মধ্যে রয়েছেন। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিও রয়েছেন এবং তারা আমাদের বিশ্বাস ও বন্ধুত্বের শক্তির জীবন্ত সাক্ষ্য, যা পাহাড়কেও টলাতে পারে।'
রামনাথ কোবিন্দ বলেন, 'বিজয়ের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপনে এ সফর অনন্য সম্মানের। এটি আমাদের বন্ধুত্বের সত্যিকারের প্রতিফলনও বটে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মতো করোনা মহামারি শুরুর পর ভারতের বাইরে এটিই আমার প্রথম সফর। মুজিববর্ষ উদযাপনে অংশ নিতে পেরে আমি সম্মানিত।'