Bangladesh
আজ সেই ভয়াল ২৫ মার্চের রাত
‘অপারেশন সার্চলাইটের’ নামে পাকিস্থানি বাহিনীর অতর্কিত সেই হামলায় মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছিল রাজধানী ঢাকা শহর। পৃথিবীবাসী অবাক হয়ে দেখেছে শান্তির ধর্ম ইসলামের নামে বর্বর হানাদার বাহিনী কিভাবে একরাতে প্রায় অর্ধলক্ষ ঘুমন্ত বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ-এর প্রতিবেদক সাইমন ড্রিং-এর বর্ণনায় জানা যায়, ২৫ মার্চ ৭১-এ রাত দশটার দিকে শুরু হয় সেই পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। যদিও পরিকল্পনা অনুযায়ী জিরো আওয়ার বা আক্রমণের নির্ধারিত সময় ছিল রাত ১২টাা পর পরই।
মধ্যরাতে ঢাকার পিলখানা, রাজারবাগ পুলিশলাইন, নীলক্ষেত এলাকায় আক্রমণ চালায় হানাদাররা। ঢাকার ইপিআর সদর দপ্তর পিলখানার বাঙালি সৈনিকদের নিরস্ত্র করে এবং ইপিআর দফতরের ওয়্যারলেস ব্যবস্থা দখল করে নেয় ২২তম বেলুচ রেজিমেন্ট।
অন্যদিকে ১৮ নং পাঞ্জাব, ৩২ নং পাঞ্জাব ও ২২ নং বেলুচ রেজিমেন্ট ট্যাংক ও মর্টার হামলায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়। হানাদার বাহিনীর মেশিনগানের গুলি, ট্যাংক-মর্টারের গোলা আর আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে ওঠে বিভীষিকাময়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে ঘটে শংসতম হত্যার সব থেকে বড় ঘটনাটি। হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।
ভয়াবহ এই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন শিক্ষককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। অন্যদিকে জহুরুল হক হলের প্রায় ২০০ ছাত্রকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করে পাকি বাহিনী। এই জঘন্যতম হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে প্রতিটি ছাত্রাবাসে, বাদ যায়নি রোকেয়া হল। আর্চার কে ব্লাড এর বই থেকে জানা যায়, ছাত্রীনিবাস রোকেয়া হলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় এবং ছাত্রীরা আগুন থেকে বাঁচতে হলের বাইরে আসা শুরু করলে পাকবাহিনী তাদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। পাকবাহিনীর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সাথে আর্মি ইউনিট ৮৮ এর কথোপকথন থেকে জানা যায়, আনুমানিক ৩০০ জন ছাত্রীকে সে রাতে হত্যা করা হয়।