Bangladesh
প্রতিটি ভাষাকে সম্মান করে এমন আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব চায় বাংলাদেশ: শাহরিয়ার আলম
ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, 'আরো অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত' বিশ্বের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন, যেখানে প্রতিটি ভাষা মূল্যবান ও সম্মানিত হবে।
"আমাদের বিশ্ব অবিশ্বাস্যভাবে বৈচিত্র্যময়, বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং ভাষাগত পটভূমির লোকেরা একসাথে বাস করে এবং কাজ করে। যাইহোক, এই বৈচিত্র্য কখনও কখনও ভুল বোঝাবুঝি এবং দ্বন্দ্বের কারণ হতে পারে, যা বিভাজন এবং উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।"
তিনি বলেন, "সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সম্প্রীতি গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২১ শে ফেব্রুয়ারির চেতনা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ুক।"
ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহরিয়ার আলম এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত মেরি মাসদুপুয় এবং কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের সদস্যরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভাষা আন্দোলনের বিজয় বাঙালিকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
"১৯৫২ সালের পর আমাদের ইতিহাসের সব মাইলফলক- ১৯৬৬ সালের ছয় দফা দাবি, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালে পাকিস্তান জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন এবং অবশেষে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা- ভাষা আন্দোলনের চেতনা ও আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল।"
তিনি বলেন, "সম্ভবত আমরাই বিশ্বের একমাত্র জাতি যারা মাতৃভাষার মর্যাদার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছি। এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন আমাদের মাতৃভূমির সাহসী সন্তানরা।" শাহরিয়ার আলম বলেন, "ভাষা আন্দোলন আমাদের সুবিধার্থে বাঙালি জাতীয়তাবাদ আন্দোলনকে গতি ও শক্তি জুগিয়েছে।"
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বাংলায় প্রথম ভাষণ দিয়েছিলেন।
এর উদ্দেশ্য ছিল বাংলা সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করা, যার জন্য বাঙালিরা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছে এবং মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনেও বাংলায় ভাষণ দেন।
শাহরিয়ার আলম বলেন, "আমাদের ভাষা আন্দোলনের চেতনা কে উপলব্ধি ও স্বীকৃতি দেয়ার জন্য আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি কৃতজ্ঞ।"
একটি জাতিকে বোঝার সর্বোত্তম উপায় হ'ল তারা যে ভাষায় কথা বলে তা শেখা।
তিনি বলেন, "এই দিনে আমাদের উচিত বিভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষার সমৃদ্ধি উদযাপন করা এবং একে অপরের প্রতি বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধা বাড়ানো।"
তিনি বলেন, প্রতিবন্ধকতা ভাঙতে এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যবধান কমাতে আরও আন্তঃসাংস্কৃতিক সংলাপ শুরু করা উচিত।
তিনি বলেন, "আমাদের উদ্যোগের ইতিবাচক ফলাফল নিশ্চিত করতে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত সম্প্রীতির প্রসারে আমরা যে সব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি তার উদ্ভাবনী সমাধান তৈরি করতে আমরা সকল স্তরের সরকারি ও বেসরকারি স্টেকহোল্ডারদের পাশাপাশি তরুণদের সম্পৃক্ত করতে পারি।"
প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির এই যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।