Bangladesh
‘বাংলার সমৃদ্ধি’র ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত
ঢাকা, ১৩ মার্চ ২০২২: ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে নোঙর করা অবস্থায় রকেট হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজ। বর্তমানে এই জাহাজটির ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
প্রাথমিক পর্যায়ে বিমা প্রতিষ্ঠানের কাছে দাবিনামা পাঠিয়েছে জাহাজটির মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। তবে বিএসসি মনে করছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সৃষ্ট অচলাবস্থা শেষ না হওয়ার আগে, জাহাজটির ক্ষতির পরিমাণ কতো কিংবা করণীয় নিয়ে মূল্যায়ন করতে পারবে না বিমা প্রতিষ্ঠান। ফলে জাহাজটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তেও আসা সম্ভব নয়।
আপাতত দুটি বিষয় চিন্তা করা হচ্ছে। একটি হলো, জাহাজটি মেরামত করে ব্যবহার উপযোগী করা। অন্যটি সরাসরি বিমা কোম্পানি থেকে বিমা দাবি আদায় করা। তবে যে দিকে গেলে বিএসসি লাভবান হবে, সে বিষয়ই মূলত জোর দেওয়া হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল ‘বাংলার সমৃদ্ধি’। জাহাজটি গত ২২ ফেব্রুয়ারি ভারতের মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে ইউক্রেনের ওলভিয়া বন্দরে যায়। ওলভিয়া থেকে সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল (ক্লে) নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু তার আগেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হয়। ফলে ২৯ ক্রু নিয়ে ওলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। পরে ২ মার্চ রকেট হামলার শিকার হয়। এতে জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ হাদিসুর রহমান প্রাণ হারান। পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটির অন্য ২৮ নাবিককে অক্ষত অবস্থায় নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর ৬ মার্চ দুপুরে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্ট পৌঁছান তারা। সবশেষ ৯ মার্চ নাবিকরা টার্কিশ এয়ারের একটি ফ্লাইটে ইস্তাম্বুল হয়ে ঢাকায় ফেরেন।
বিএসসি সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের শেষ দিকে চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘জিয়াংসু নিউ ইয়ানজি শিপ বিল্ডিং’ কোম্পানি থেকে দুই কোটি ৬৩ লাখ ডলারে কার্গো জাহাজটি কিনে নেয় বাংলাদেশ। জাহাজটির বর্তমান দাম দুই কোটি ২৫ লাখ ডলার। এটি বাংলাদেশের সাধারণ বিমা করপোরেশন এবং যুক্তরাজ্যের ইন্স্যুরেন্স মার্কেট ‘লয়েডস অব লন্ডনে’র বিজলি গ্রুপে বিমা করা।
বিমা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী জাহাজের বর্তমান দামের ওপরই বিমা দাবি নির্ধারিত হবে। ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজের ন্যায় শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন সব জাহাজের ওয়ার রিস্ক কাভারেজ রয়েছে বলে জানান বিএসসি কর্মকর্তারা।