Bangladesh
২০ বছর আগে বিসিএসে উত্তীর্ণ সুমনা সরকারের ভাইভা নেয়ার নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২০ নভেম্বর ২০২০: প্রায় দুই দশক আগে ২০০১ সালে বিসিএসের (স্বাস্থ্য) প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (বিশেষ কোটা) উত্তীর্ণ সুমনা সরকারকে মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। সরকারি কর্ম কমিশনকে (পিএসসি) এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে এবং মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে তাকে নিয়োগ দিতেও বলেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে সুমনা সরকারের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু ও অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার চৌধুরী। অন্যদিকে পিএসসির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম খালেদ আহমেদ।
মামলার বিবরণ জানা যায়, ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত ২৩তম বিসিএস (বিশেষ) স্বাস্থ্য ক্যাডারে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন সুমনা সরকার। প্রিলিমিনারি ও লিখিত পরীক্ষায় পাস করেন। কিন্তু ওই সময় মুক্তিযোদ্ধার সনদ সংক্রান্ত জটিলতার কারণ দেখিয়ে সুমনাসহ অনেক পরীক্ষার্থীর মৌখিক (ভাইভা) পরীক্ষার কার্ড ইস্যু করা হয়নি। একারণে তারা ভাইভা পরীক্ষা দিতে পারেনি।
এরপর ২০০১ সালে মৌখিক পরীক্ষা দিতে গেলে সুমনার ভাইভা পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়নি। এরপর ২০০৩ সালে তাদের মধ্যে থেকে ১২ জন হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট তাদের মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। পরে ওই ১২ জন মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে সরকারি চাকরিতে নিয়োগও পান।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সালে এসে ডা. সুমনা সরকার হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন।
ওই রিটের দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৫ সালে হাইকোর্ট তার মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ করার নির্দেশ দেন। কিন্তু হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে পিএসসি। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের রায়টি ২০১৬ সালের ১০ অক্টোবর স্থগিত করেন।
এরপর দীর্ঘদিন মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারের জন্য অপেক্ষমাণ ছিল। অবশেষে এই মামলার শুনানি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ সুমনাকে মৌখিক পরীক্ষা দেয়ার সুযোগ দিতে পিএসসিকে নির্দেশ দিয়ে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন। ফলে সুমনা সরকার প্রায় দুই দশক পর তার সেই স্বপ্নের বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় বসার সুযোগ পেলেন।
সুমনা সরকারের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল হলেও বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে একটি বেসরকারি চক্ষু হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ হিসেবে চাকরি করছেন।
তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. অমল কৃষ্ণ সরকার টাঙ্গাইলের কাদেরিয়া (কাদের সিদ্দিকী) বাহিনীর সদস্য ছিলেন বলেও তিনি জানান।