Bangladesh
চীন থেকে ‘ডাক্তার’ হয়ে ফেরা ১৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
ঢাকা, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ : বাংলাদেশের ১৩ তরুণ ট্যুরিস্ট ভিসায় গিয়েছিলেন চীনে।
দেশে ফিরে সেজে বসলেন ডাক্তার। বললেন ওই দেশে এমবিবিএস পাস করেছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তদন্ত করে দেখা গেল তাদের সব সার্টিফিকেট ভুয়া।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে ধরা পড়ে প্রথমে মামলার আসামি এবং পরে চার্জশিটভুক্ত আসামি হলেন তারা।
সম্প্রতি এই ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এবং তাদের যারা সহযোগিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক নিশ্চিত করেছেন।
অনুমোদিত চার্জশিটের আসামি হয়েছেন ১৬ জন। এরমধ্যে ৩ জন আছেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের কর্মকর্তা। এ তিনজন হলেন- প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার মো. জাহিদুল হক বসুনিয়া, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন ও সাবেক কম্পিউটার অপারেটর অ্যান্ড সুপারভাইজার মোহাম্মদ মজিবুর রহমান।
এমবিবিএস পাসের ভুয়া সনদ ব্যবহার করে ডাক্তার হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেওয়া ৭ চিকিৎসককে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুদক। পরে ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি গাজীপুর কাশিমপুর ডক্টর'স হাসপাতাল থেকে মো. শিবলী সাদিক নামে আরও একজন ভুয়া ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক সেলিনা আখতার মনির নেতৃত্বে একটি টিম তাদের গ্রেপ্তার করে। তিনিও মামলাটি তদন্ত করেন।
তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ওই ১৩ জন বাংলাদেশি ছাত্র চীনের তাইশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিবিএস পাস করেন বলে জানান। তারা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া এমবিবিএস সনদ ব্যবহার করে বিভিন্ন তারিখে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত রেজিস্ট্রেশন যোগ্যতার পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ওই পরীক্ষায় ‘উত্তীর্ণ হয়েছেন’ বলে চিকিৎসক হিসেবে নিবন্ধন নম্বর গ্রহণ করে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন অনুশীলন এবং বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছেন। রেকর্ডপত্র যাচাইকালে দেখা যায়, তাদের এমবিবিএস সার্টিফিকেটগুলো ছিল ভুয়া। তারা আসলে এমবিবিএস পাস করেননি।
সূত্র আরও জানায়, এমবিবিএস সনদের সঠিকতা যাচাই করার জন্য সনদপত্রগুলোর অনুলিপি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে তাইশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠায় দুদক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে চীনের বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে ওই সনদপত্রগুলো যাচাইপূর্বক বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ইস্ট এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিক সেকশনে ২০১৯ সালের ২১ জানুয়ারি দুদকে রেকর্ডপত্র পাঠায়। প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন তাইশান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে উল্লিখিত ১৩ জন এমবিবিএস ডিগ্রিধারীর এমবিবিএস সনদ ভুয়া।