Bangladesh
কক্সবাজারে সাঈদীর গায়েবানা জানাজা শেষে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৬ আগস্ট ২০২৩ : মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদন্ডে দন্ডিত জামায়াতে ইসলামীর সাবেক নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর গায়েবানা জানাজার পর কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জানাজায় অংশ নেওয়া লোকজনের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওসি, ইউএনও, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, এসিল্যান্ডসহ অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়ি। সহিংসতার একপর্যায়ে করা গুলিতে নিহত হয়েছেন একজন। এসময় দুই থানার ওসিসহ ২০ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ১৫ আগস্ট বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চকরিয়ার চিরিঙ্গা পুরাতন জামে মসজিদে এলাকা ও পেকুয়ার বারবাকিয়া বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে। চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদ ও পেকুয়া থানার ওসি মোহাম্মদ ওমর হায়দার এ তথ্য জানিয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের পেকুয়া ও চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গুলিতে নিহত ফোরকানুল ইসলাম (৬০) চকরিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল বারিপাড়ার বাসিন্দা। তিনি চিরিঙ্গা রাস্তার মাথা এলাকায় চায়ের দোকান চালাতেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সোমবার রাতে মারা যাওয়া সাঈদীর গায়েবানা জানাজা মঙ্গলবার বিকেলে পড়ার ঘোষণা দিয়েছিল কক্সবাজার জেলা জামায়াত। সেই সূত্র ধরে চকরিয়া পাইলট স্কুল মাঠে জানাজা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জেলা জামায়াত তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টে মসজিদে ওয়াক্তিয়া নামাজ শেষে শুধু দোয়া করার সিদ্ধান্তের কথা প্রচার করে দুপুরে। এরপরও চকরিয়া পাইলট স্কুল মাঠে জামায়াত ও সাঈদীর অনুসারীরা বিকেল ৩টার দিকে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকে তারা চিরিঙ্গা পুরাতন জামে মসজিদে এসে দোয়ায় শরিক হন।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তারা মসজিদ থেকে বের হন। এসময় সদ্য বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় সিকলঘাট এলাকায় ত্রাণ দিয়ে নিজ নিজ গাড়িতে ফিরছিলেন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), চকরিয়া থানার ওসি, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তাদের গাড়ি লামার চিরিঙ্গা এলাকায় পৌঁছামাত্র গায়েবানা দোয়া থেকে ফেরা লোকজনের সামনে পড়ে। কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা প্রশাসনের গাড়িতে হামলা শুরু করেন। ইউএনওর গাড়ি দ্রুত চালিয়ে আক্রান্ত হওয়া থেকে পার পেলেও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওসির গাড়ি ভাঙচুরের কবলে পড়ে। এসময় গুলিতে একজন নিহত হন।
পেকুয়ার ইউএনও পূর্বিতা চাকমা বলেন, গায়েবানা জানাজা শেষে লোকজন পুলিশের গাড়িতে হামলা করেছে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই আমরা। এসময় কে বা কারা আমাদের গাড়িতেও ইট-পাটকেল মেরেছে। আমার গাড়ির পেছনের লাইটে আঘাত লেগেছে। এসিল্যান্ডের গাড়িতে একটু বেশি ক্ষতি হয়েছে জেনেছি। অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, অসাধু লোকজন হামলায় কিশোর বা শিশুদের ব্যবহার করেছে।