Bangladesh
ভোরের মধ্যে ভোলার পাশ দিয়ে উপকূলে উঠবে সিত্রাং
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০২২: বাংলাদেশ উপকূলের দিকে ক্রমশ ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আজ মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বুলেটিনে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত ও চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার ভোরের মধ্যে ভোলার পাশ দিয়ে এ ঝড় পুরোপুরি উপকূলে উঠে আসবে বলে ধারণা করছে আবহাওয়া অফিস। জয়েন্ট টাইফুন ওয়ার্নিং সেন্টারের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সোমবার মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কেন্দ্রভাগ পটুয়াখালীর রাঙাবালি বা চর মন্তাজ এলাকায় উপকূল স্পর্শ করবে। তখন বাতাসের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ৫০ নট বা ঘণ্টায় ৯৩ কিলোমিটারের মত। বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ রয়েছে ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিলোমিটার।
এ ঝড়ের ব্যাস ৪০০ থেকে ৫০০ কিলোমিটার। ফলে এর বর্ধিতাংশ এরইমধ্যে স্থলভাগে তাণ্ডব চালাতে শুরু করেছে। পটুয়াখালী, ভোলা, নোয়াখালীসহ উপকলীয় জেলাগুলোতে প্রবল ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি চলছে। বর্তমানে সিত্রাং পায়রা বন্দর থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড়টি মধ্যরাতে মূল আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চের পর ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিকেল ৪টা থেকে দুর্ঘটনা এড়াতে এই রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে নদী উত্তাল থাকায় বেলা ১১টা থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ৩২ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব দিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। সোমবার মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকার সংসদ সদস্য এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে নিয়মিত তথ্য নিচ্ছেন এবং জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিচ্ছেন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে ১৫ জেলা ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। বরগুনা ও পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।