Bangladesh
সারাদেশেই ডেঙ্গুর প্রকোপ, ধরন বদলে ছড়াচ্ছে দ্রুত
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৩ জুলাই ২০২৩: সারাদেশেই মহামারি আকারে ছড়াচ্ছে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। এরই মধ্যে লার্ভার জন্ম ও কামড়ানোর ধরনেও পরিবর্তন এসেছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েকদিন পাঁচ-সাতশ করে আক্রান্ত হলেও সবশেষ দুদিন এ সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে।
চলতি বছর জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৬ হাজারের বেশি মানুষ। শুধু জুলাইয়ের ১২ দিনে এ সংখ্যা ছাড়িয়েছে আট হাজার। এবার এখন পর্যন্ত গোপালগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা ও সুনামগঞ্জ ছাড়া দেশের সব জেলায়ই ছড়িয়েছে ডেঙ্গু। ঢাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঢাকার বাইরেও বাড়ছে ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ডেঙ্গুর সংক্রমণ সামান্য থাকলেও মে মাস থেকে ঊর্ধ্বগতি শুরু হয়। মে মাসেই ১০৩৬ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি মৃত্যু হয় দুজনের। জুন মাসে তা কয়েকগুণ বেড়ে হাসপাতালে ভর্তি হন পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন। জুলাই মাসে এসে এ চিত্র পুরোপুরি বদলে গেছে। এই মাসের প্রথম ১২ দিনেই আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আট হাজার ১৬৫ জনে। আর মৃত্যু হয়েছে ৪১ জনের। প্রতিদিনই বাড়ছে এ সংখ্যা।
এবার বর্ষার আগেই এ রোগের সংক্রমণ বাড়ায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা বাড়ার আশঙ্কার কথা জানানো হয়। বিশেষজ্ঞরাও বলে আসছিলেন একই কথা। এ অবস্থায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে হাসপাতালে হাতেগোনা কয়েকজন চিকিৎসক-নার্স দিয়ে ডেঙ্গুর চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া কঠিন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার উপ-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে মৌখিকভাবে ঘোষণা হয়েছে। তবে কখন থেকে পুরোপুরি ডেডিকেটেডভাবে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাসপাতালকে ডেঙ্গু ডেডিকেটেড ঘোষণা করার জন্য পর্যাপ্ত লোকবল ও সরঞ্জামের ব্যবস্থা এখনো হয়নি। তা হয়ে গেলে শিগগির পুরোপুরি ডেডিকেটেড হাসপাতাল ঘোষণা করা হবে।
এবছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, প্রথমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হলে শারীরিক পরিস্থিতির বেশি অবনতি হয়। এবছর সন্দেহ করা হচ্ছে ডেঙ্গুর ডেন-২ ধরন বেশি। তবে ড্রেন বা সেরোটাইপ যে ধরনেরই আক্রান্ত হোক সেটি বড় বিষয় নয়, একাধিকবার আক্রান্তদের ঝুঁকি বেশি। এবার দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার আক্রান্ত বাড়ছে। জটিলতাও বেশি দেখা দিচ্ছে। এরপরও অনেকে ডেঙ্গুকে গুরুত্ব কম দিচ্ছেন।