Bangladesh
ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট: ১৬ বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা, ব্যবসায়ীদের বাধায় আটকে ছিল অপসারণ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৩ : যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা ও অগ্নিঝুঁকির জন্য ঢাকা নিউ সুপার মার্কেট (দক্ষিণ) ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করেছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। এ ঘোষণার পর পার হয়েছে ১৬ বছর। ২০১৬ সালের দিকে আরেকটি প্রতিবেদনেও মার্কেটটি খালি করতে বলা হয়। এরপরও ব্যবসায়ীদের বাধায় মার্কেটটি খালি করতে পারেনি ডিএসসিসি।
সংস্থাটির সংশ্লিষ্টদের দাবি, এতদিন ব্যবসায়ীদের বাধার কারণে মার্কেটটি খালি করা যায়নি। তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশেই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনতলা মার্কেটটির ছাদ ও চারপাশের দেওয়ালের বিভিন্ন অংশে পলেস্তারা আগে থেকেই খসে পডে়ছে। পিলারে ধরেছিল বড় বড় ফাটল। তাই যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছিল ডিএসসিসি।
এমন আশঙ্কার ১৬ বছর পর শনিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে মার্কেটটিতে সত্যি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ৩০ ইউনিটের প্রচেষ্টায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে পুড়ে গেছে কয়েকশ দোকান। আগুন লাগার কারণ নিয়ে ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলছেন। তারা বলছেন, শনিবার ভোররাতে চন্দ্রিমা মার্কেট থেকে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে যাওয়ার জন্য পদচারী সেতুটি ভাঙা শুরু করে ডিএসসিসি। এতে শর্ট সার্কিট থেকে দোকানে আগুন লাগে।
তবে পদচারী সেতু ভাঙার সঙ্গে ঢাকা নিউ সুপার মার্কেটে আগুনের সূত্রপাতের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, এই পদচারী সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। তাই শুক্রবার দিনগত রাতে সেটি ভাঙতে যায় ডিএসসিসির কর্মীরা। এর মধ্যে মার্কেটে আগুন লাগে। এখন ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ বলছেন, সেতুটি ভাঙার কারণে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, পদচারী সেতুর সঙ্গে মার্কেটের বিদ্যুতের কোনো সংযোগ নেই।
ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে বুয়েটের এক প্রতিবেদনে মার্কেটটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছিল। তখন সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল ডিএসসিসি। কিন্তু ব্যবসায়ীদের বাধায় আর বাস্তবায়ন হয়নি। পরে নিজেরাই ছাদের খসে পড়া অংশ ও পিলারগুলো পলেস্তারা করেন দোকানিরা। এরপর ২০১৬ সালের ১৭ অক্টোবর আলাদা আরেকটি প্রতিবেদনে মার্কেটটি তিন সপ্তাহের মধ্যে খালি করতে সুপারিশ করে বুয়েট। কিন্তু মার্কেটের ব্যবসায়ীরা তখনও বাধা দেন। এই মার্কেটে প্রায় এক হাজার ২৪৫টি দোকান রয়েছে।