Bangladesh
দুর্গম দ্বীপ কুতুবদিয়ায় পৌঁছেছে বিদ্যুৎ
ঢাকা, ২২ জুলাই ২০২৩ : দুর্গম দ্বীপ কুতুবদিয়ায় বিদ্যুতের আলোয় নানা সুবিধার পাশাপাশি জীবনে প্রথম আইসক্রিম দেখেছে অনেকে। প্রসূতি মায়েদের এখন আর ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পাড়ি দিতে হয় না, সিজারিয়ান ডেলিভারি হয় উপজেলা হাসপাতালেই।
দুই মাস আগে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপজেলায় জাতীয় গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর পর সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় নানা পরির্বতন এসেছে। তাছাড়া এলাকার আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে মগনামা ঘাট পর্যন্ত ৩৩ কেভি রিভার ক্রসিং লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশে ফাইবার অপটিকসহ পাঁচ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ দিতে কুতুবদিয়ায় নির্মিত হয়েছে দুই কিলোমিটার বিতরণ লাইন।
দেশব্যাপী শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে ২০২০ সালে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘হাতিয়া দ্বীপ, নিঝুম দ্বীপ ও কুতুবদিয়া দ্বীপ শতভাগ নির্ভরযোগ্য ও টেকসই বিদ্যুতায়ন’ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পটির মেয়াদ রয়েছে। মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন কুতুবদিয়া দ্বীপে স্বাভাবিক লাইন নির্মাণের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনো সুযোগ না থাকায় সাবমেরিন ক্যাবল ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ব্যয়বহুল হওয়া সত্ত্বেও শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আনতে উদ্যোগ নেয় সরকার।
কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ি থেকে মগনামা ঘাট পর্যন্ত ৩৩ কেভি রিভার ক্রসিং লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। সেখান থেকে সাগরের তলদেশে ফাইবার অপটিকসহ পাঁচ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট সাবমেরিন লাইন নির্মাণের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুৎ দিতে কুতুবদিয়ায় নির্মিত হয়েছে দুই কিলোমিটার বিতরণ লাইন।
দ্বীপটির প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় বর্তমানে প্রায় ২ লাখ মানুষ বসবাস করেন। এখানে ১৯৮০ সালে জেনারেটরের মাধ্যমে প্রায় ৬০০ গ্রাহকের মধ্যে সান্ধ্যকালীন কয়েক ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু করা হয়। তবে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যাওয়ায় সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন সময় স্বল্প আকারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে পিডিবি।
শত বছরের কুতুবদিয়ায় মানুষের জীবনযাত্রার মান সমৃদ্ধ হলেও বিদ্যুৎ না থাকায় সামগ্রিক উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত ছিল। স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে গেলেও এখানকার মানুষের কথা ভাবেনি কোনো সরকার। বর্তমানে বিদ্যুৎ থাকায় এখানকার মানুষের জীবনমান বদলে গেছে। সর্বক্ষেত্রে এসেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। কুতুবদিয়ার মানুষের কাছে বিদ্যুৎ একসময় স্বপ্ন ছিল। সেই স্বপ্ন এখন বাস্তব।