Bangladesh

সাংবাদিক শামসুজ্জামান কারাগারে
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৩০ মার্চ ২০২৩: রাজধানীর রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার।
শামসুজ্জামানের আইনজীবী প্রশান্ত কুমার কর্মকার তার জামিন চেয়ে আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. তোফাজ্জল হোসেনের আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের রমনা থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক নিজাম উদ্দিন ফকির বিষয়টি জানিয়েছেন।
এর আগে বুধবার রাতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান, পত্রিকাটির সাভারের নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস, সহযোগী ক্যামেরাম্যানসহ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নামে রাজধানীর রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন আবদুল মালেক নামে এক আইনজীবী। ওই মামলায় শামসুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করে রমনা মডেল থানা পুলিশ।
যদিও শামসুজ্জামানকে তার আগেরদিন রাতেই সাভারের বাসা থেকে সিআইডি পুলিশের পরিচয়ে তুলে আনা হয়। তখন বলা হয়েছিল শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করা হয়েছে। গোলাম কিবরিয়া নামে যুবলীগের এক নেতা ওই মামলা করেন, যেটির এজাহার গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
বুধবার রাতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি করেন আইনজীবী আবদুল মালেক।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করে। একই সঙ্গে সংবাদটি দৈনিক প্রথম আলো তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করে। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, ওই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। পত্রিকার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে- ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো।’
এজাহারে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সংবাদটি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদটি দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত হাজার হাজার মানুষ তাদের ব্যবহৃত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রিনশটসহ শেয়ার করেন। এই ঘটনায় বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের সোনালি গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি নিয়ে বাংলাদেশের জনগণসহ বহির্বিশ্বে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। মহান স্বাধীনতা দিবসের দিনে এ ধরণের বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ প্রকাশ করায় বিশ্বব্যাপী দেশের ভাবমূর্তি ও স্বাধীনতার অর্জন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়।