Bangladesh

সুনামগঞ্জে বন্যায় ১৮০০ কোটি টাকার ক্ষতি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২ জুলাই ২০২২: সুনামগঞ্জে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির দেখেছে মানুষ। শুক্রবার (১ জুলাই) সকালে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সুরমা নদীর পানি কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল আছে। এদিকে বন্যাকবলিত হওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পর প্রাথমিকভাবে বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানিয়েছে জেলা প্রশাসন সুনামগঞ্জ।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, জেলার ১১টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ক্ষতিগ্রস্ত বসতঘরের সংখ্যা ৪৫ হাজার ২৮৮টি। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে ৪ হাজার ৭৪৭টি। আংশিক ক্ষতি হয়েছে ৪০ হাজার ৫৪১টি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো জেলার বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি ও ত্রাণ তৎপরতা-সম্পর্কিত এক প্রতিবেদনে এসব উল্লেখ করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। তবে বন্যা পুরোপুরি কমে গেলে চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় জেলায় ২৫ হাজার ২০৪টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। বন্যায় ১ হাজার ৬৪২টি গবাদিপশু মারা গেছে। এর মধ্যে গরু ৪২২টি, মহিষ ৩৭টি, ছাগল ৬৬৯টি ও ভেড়া ৫১৪টি। এ ছাড়া বন্যায় ২৮ হাজার ৮০৫টি মুরগি ও ৯৭ হাজার ৮৩১টি হাঁস মারা গেছে। বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত ৩৮৪ কিলোমিটার সড়ক, ১৫৫টি সেতু-কালভার্টের সংযোগ সড়ক এবং ৪টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখনো বিভিন্ন স্থানে পানি আছে। তাই বন্যার পানি পুরোপুরি নেমে যাওয়ার পর চূড়ান্ত ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
সুনামগঞ্জে এবারের ভয়াবহ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মানুষের ঘরবাড়ি ও সড়কের। এর আগে কোনো বন্যায় এত ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়নি, এত সড়ক নষ্ট হয়নি। বন্যার পানি কমলেও বাড়িঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় এখনো বিপুলসংখ্যক মানুষ নিজের ভিটায় ফিরতে পারছে না। ঘরবাড়ি হারানো এতসংখ্যক মানুষ কীভাবে বাড়িতে উঠবে, সেটাই এখন উদ্বেগের বিষয়।
তবে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বন্যার পানি শহর থেকে কিছুটা কমলেও জেলার সার্বিক পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। হাওর এলাকার রাস্তাঘাট, হাটবাজার, বাড়িঘর এখনো বন্যার পানির নিচে। মানুষ এখনো আশ্রয়কেন্দ্র অবস্থান করছে। বেশির ভাগ বাড়িঘর স্রোত আর ঢেউয়ে ভেঙে যাওয়ায় মানুষ বাড়িঘরে ফিরতে পারছে না। খেয়ে না-খেয়ে কোনোমতে দিন পার করছে সবাই।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এবারের ভয়াবহ বন্যায় সুনামগঞ্জের বাড়িঘর, সড়কের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো অনেক জায়গায় পানি থাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সঠিকভাবে দেওয়া যাচ্ছে না।