Bangladesh
গণহত্যা: পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে দূতাবাস ঘেরাও
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০: একাত্তরের গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে দূতাবাস ঘেরাও করে স্মারকলিপি দিয়েছে একটি সংগঠন। সেমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে একই দাবিতে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে সংগঠনটি।
পরে দূতাবাস অভিমুখে পদযাত্রা করলে শাহবাগে পুলিশ তাদের আটকে দিয়ে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তান দূতাবাসে নিয়ে যায়। সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ডিপ্লোমেটিক পুলিশের ডিসি আশরাফুল ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহণ করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, ভাস্কর-শিল্পী রাশা, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল, সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন, সংগঠনটির আইন বিষয়ক সম্পাদক এজেডইউ প্রিন্স ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনেট মাহমুদ।
এর আগে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশের সমাবেশে সংহতি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, “পাকিস্তান এখনও আমাদের মেনে নিতে পারছে না। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন বাংলাদেশের কাছে তাদের ক্ষমা চাইতে হবে, পাওনা টাকা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু তার কোনোটাই তারা পূরণ করেনি। বরং ১৯৭৫ সালে খুনি জিয়া-মোশতাক বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুর খুনের পেছনে পাকিস্তানের বড় হাত ছিল। তারপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায়ও পাকিস্তানের হাত ছিল। সেই গ্রেনেড পাকিস্তান থেকে এসেছিল। মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে পাকিস্তান দূতাবাস এখনও ষড়যন্ত্র চলমান রেখেছে। পাকিস্তান দূতাবাসের কার্যক্রমে নজরদারি বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।”
ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ বলেন, "পাকিস্তানকে একাত্তরের গণহত্যা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দ্রুত ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় গণহত্যার অপরাধে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করব। সাম্প্রদায়িক মৌলবাদী অপশক্তির পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাকিস্তান বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমরা এদের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিব।”
মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন বলেন, স্বাধীনতার ৪৯ বছর পার হলেও আজ পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে একাত্তরের গণহত্যার দায় স্বীকার করেনি। এখনও পর্যন্ত পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। একাত্তরের গণহত্যা, শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যা, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যা, জাতীয় চার নেতা হত্যা, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা ইত্যাদি একই সূত্রে গাঁথা।
"পাকিস্তানকে অবশ্যই এসব নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বাংলাদেশের নিকট রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। পাকিস্তান দ্রুত ক্ষমা না চাইলে বাংলাদেশ সরকারকে পাকিস্তানের সাথে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হব। অন্যথায় সমগ্র দেশে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।"