Bangladesh
বধ্যভূমিতে পাওয়া দেহাবশেষ এখন মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রে
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১১ ডিসেম্বর ২০২১: পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট সংঘটিত হয়েছিল গণহত্যা। লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ২৬ জন হিন্দু ও দুজন মুসলমানকে। এক মাস আগে লক্ষ্মীপুরের সেই বধ্যভূমিতে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের কাজ শুরু করে গণপূর্ত অধিদপ্তর। খনন কাজের সময় নিহতদের বেশ কয়েকজনের দেহাবশেষ পাওয়া যায়। সেগুলো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক জাদুঘরে রাখার জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় ইতিহাসবিদ অধ্যাপক, গণহত্যা- নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. মুনতাসীর মামুন ড. মুনতাসির মামুনের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
এ নিয়ে শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেলে লক্ষ্মীপুর গ্রামের বধ্যভূমিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন। লক্ষ্মীপুর গ্রামের বধ্যভূমিতে আয়োজিত সমাবেশে স্বজন হারানো পরিবারগুলোর সদস্য, সে সময়কার বেশ কিছু বিধবা নারী এবং স্থানীয় জনসাধারণ উপস্থিত ছিলেন।
ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, সেদিন জামায়াত ইসলামীর মতিউর রহমান নিজামীসহ রাজাকার, আল বদরের লোকজন এ নারকীয় হত্যাকাণ্ডে সহায়তা করেছিল। স্থানীয়দের এ বিষয়ে ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে। এমন হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের আবার ভোট দেওয়া হয়েছিল বা হয়। তিনি আরও বলেন, এ খানে গণহত্যার শিকার হয়ে যেসব পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছেন তারা যে সহায়তাটুকু পাচ্ছেন তা আওয়ামী লীগ সরকারই দিচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারে থাকায় আজ এখানে একটি স্মৃতিসৌধ হচ্ছে।
ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, সে সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখনো যারা দরিদ্র ও জর্জরিত আছেন তাদের পাশে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের এগিয়ে আসা দরকার। সবাই কিছু কিছু সহায়তা করলে সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। যারা গৃহহীন আছে তারা উপজেলা প্রশাসনে যোগাযোগ করতে পারেন।
১৯৭১ সালে লক্ষ্মীপুর গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ১৯৭১ সালের ২০ আগস্ট পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনী অতর্কিত হানা দেয়। তারা স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তার ২৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে আটঘরিয়ার দেবোত্তর, বংশিপাড়া, গড়ুরী, আটঘরিয়া বাজার এবং একদন্তের বেলদহ এলাকার মধ্য সবচেয়ে বেশি মানুষকে হত্যা করা হয় এই লক্ষ্মীপুর গ্রামে।