Bangladesh
উগ্রপন্থীদের নেতৃত্ব দিতেন হেফাজত নেতা হারুন
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৩০ এপ্রিল ২০২১: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের বিলুপ্ত কমিটির কেন্দ্রীয় গবেষণা সম্পাদক মুফতি হারুন ইজহারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে চট্টগ্রাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঞ্জুমান আরার ভার্চুয়াল আদালত এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম জেলা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির বলেন, ‘হাটহাজারী থানা পুলিশ হারুন ইজহারকে তিন মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। পরে আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।’
অরাজনৈতিক দাবি করা হেফাজতে ইসলামের উগ্রপন্থীদের নেতৃত্ব দিতেন শায়খ মুফতি হারুন ইজহার। সংগঠনে তাকে সবাই ‘মানহাজি’দের দলনেতা হিসেবেই চিনতেন।
বক্তব্য-বিবৃতিতে জিহাদের ডাক দেওয়া হারুন ইজহারকে এর আগেও গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। জামিনে বেরিয়ে আগের মতোই উগ্রপন্থা মতবাদ ছড়িয়ে কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছিলেন তিনি। হেফাজতকে তিনিই উগ্রবাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তার সঙ্গে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ ও জেএমবির নেতাকর্মীদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) ভোরে চট্টগ্রামের লালখান বাজারের জামেয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসা থেকে এক সহযোগীসহ হারুন ইজহারকে গ্রেফতার করে এলিট ফোর্স র্যাব।
পরে এদিন বিকালে তাকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হাটহাজারী থানা পুলিশ হারুন ইজহারকে তিনটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে ২১ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে। আদালত রিমান্ড শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এলিট ফোর্স র্যাবের গোয়েন্দা শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘সাম্প্রতিক মোদিবিরোধী আন্দোলনের নামে হেফাজত হাটহাজারীতে যে তাণ্ডব চালিয়েছিল, তার মদদদাতা ছিলেন হারুন ইজহার। তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই উগ্রপন্থা ছড়ানো এবং জঙ্গি কার্যক্রমে জড়ানোর অভিযোগে মামলাও রয়েছে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’
র্যাবের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০০৯ সালে হারুন ইজহারের পরিচালনাধীন লালখান বাজারে পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জামিয়াতুল উলুম আল-ইসলামিয়া মাদরাসা ঘিরে আন্তঃদেশীয় জঙ্গিরা একটি ঘঁটি তৈরি করেছিল। ওই বছরের শেষ দিকে তারা ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ও ভারতীয় হাইকমিশনারের কার্যালয়ে হামলার ছক কষেছিল।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন কর্মকর্তা জানান, হরকাতুল জিহাদ ও আফগান ফেরত মুজাহিদদের নতুন করে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে যোগসূত্র ঘটিয়ে দেওয়ার কাজটি মূলত হারুন ইজহার করতেন। তাকে সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি এসব বিষয়ে আরও বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করে তথ্য উদ্ঘাটন করা হবে।