Bangladesh
পদ্মা সেতু উদ্বোধন, বাঙালির আরেকটি বিজয় গাথা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৪ জুন ২০২২: আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর চালু হতে যাচ্ছে পদ্মা সেতু। এ যেন বাঙালির আরেকটি বিজয় গাথা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ শেষে পাক হানাদারদের আত্মসমর্পনের মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছিল বাঙালির বিজয গাথা, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়েও রচিত হবে আর একটি বিজয় গাথা। দেশি-বিদেশী সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে নির্মীত পদ্মা সেতুতে উড়বে আর একটি বিজয় কেতন।
প্রমত্তা পদ্মার মত খরস্রোতা নদীতে সেতু নির্মাণ করে বাঙালি আরও একবার গোটা বিশ্বকে জানান দিলো বীর বাঙালি হার মানতে জানে না। রাত পোহালেই উদ্বোধন হবে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর। ঘটবে পদ্মা পাড়ি দিতে যুগ-যুগান্তের ভোগান্তির অবসান।
পদ্মা সেতু নির্মাণে অন্যতম সাক্ষী মুন্সিগঞ্জের মাওয়া পদ্মাপাড়। তাই সেতুর উদ্বোধনের আগ মুহূর্তে মাওয়া এলাকায় আনন্দে উদ্ভাসিত পদ্মাপাড়ের মানুষ। সর্বত্র সাজসাজ রব। সেতুর উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন ও সুধী সমাবেশ হবে মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা পাড়ে। প্রস্তুত ফলক মঞ্চ। সমাবেশে আমন্ত্রণ পাচ্ছেন ৩ হাজার সুধীজন। এ তালিকায় রয়েছেন মন্ত্রিসভার সদস্য, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিক, নির্মাণ সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকরা।
সরজমিনে দেখা যায়, অনুষ্ঠানস্থল, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে সাজসজ্জায় ভরে উঠেছে। এক্সপ্রেসওয়ে সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ব্যানার-ফেস্টুন। পদ্মা সেতুর নির্মাণ করায় স্থানীয় নেতাকর্মীরাও টানিয়েছেন ফেস্টুন। সমাবেশস্থলের দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ তৈরিসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার কাজ শেষের পথে।
এছাড়া সেতুর নামফলক ও ম্যুরাল স্থাপনের কাজ প্রায় শেষের পর্যায়ে। অনুষ্ঠানস্থলের আশপাশে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজও চলছে পুরোদমে।
এরই মধ্যে পুরো মাওয়া এলাকায় জোরদার করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা বলয়। পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীর পাশাপাশি কাজ করছে বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। হাইওয়ে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, জেলা পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, নৌ পুলিশ সবাই একযোগে মোতায়েন রয়েছে। বিভিন্ন পেট্রোলিং ছাড়াও আকাশপথে থাকবে র্যাবের হেলিকপ্টারের নজরদারি।
২০০১ সালের ৪ জুলাই পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুই স্তর বিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮ মিটার। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট খরচ হঢেছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা।