Bangladesh
একই দিনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারত-পাকিস্তানের হাইকমিশনার
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৪ জুন ২০২১: একই দিনে, প্রায় একই সময়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক করেছেন ঢাকায় ভারত এবং পাকিস্তানের হাইকমিশনার। মূল ভবনের একই তলায় পাশাপাশি কক্ষে বৈঠক দুটি হয়। ঘটনাটি কাকতালীয় কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ- এমনটাই দাবি পররাষ্ট্র দফতরের সংশ্লিষ্টদের।
তাদের মতে, মন্ত্রণালয়ে কাছাকাছি সময়ে এই দুই দূতের প্রবেশ এবং বের হওয়ার দৃশ্য একেবারেই বিরল। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত অ্যাপয়েনমেন্ট ছিল ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীর। নির্ধারিত সময়েই তিনি পৌঁছান।
কিন্তু তার ১৫ মিনিট আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ঢাকাস্থ পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী। ওই বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ- বৈঠক সেরে বিদায় নেন ভারতীয় দূত। প্রতিমন্ত্রী-ভারতীয় হাইকমিশনার নাতিদীর্ঘ ওই বৈঠকে সুনির্দিষ্টভাবে কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি।
সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে যে, বৈশ্বিক ফোরামে ভারত বেশকিছু নির্বাচনে বাংলাদেশের সমর্থন চাইছে বহু দিন ধরে। এ নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়ে থাকতে পারে। তবে ওই বৈঠকে বাংলাদেশের ভ্যাকসিন প্রাপ্তি নিয়ে কোনো কথা হয়নি দাবি করে এক কর্মকর্তা বলেন, ওই বৈঠক অনেকটা অনানুষ্ঠানিক। তাই কোনো প্রেস রিলিজ ইস্যু হয়নি।
এদিকে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার বৈঠকে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে পাকিস্তানের হাইকমিশনারের কী কথা হলো জানতে চাইলে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, বৈঠকটি রুটিন হলেও ইস্যুতে ঠাসা ছিল। বহুদিন ধরে বারিধারায় পাকিস্তান হাইকমিশনের জন্য বরাদ্দ হওয়া প্লট জটিলতা ছিল। মঙ্গলবার এর সুরাহা হয়েছে। পাকিস্তান দূত এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
দ্বিতীয়ত: বৈরি পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চায়। পাকিস্তানের বন্দর ব্যবহার করে মধ্যপ্রাচ্যে পণ্য পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন সিদ্দিকী। একই সঙ্গে ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে জানিয়ে তিনি একটি প্রতিনিধিদলকে করাচি পোর্ট পরিদর্শনে নিয়ে যেতে চান বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশের ওষুধসহ বেশ কিছু পণ্যের চাহিদা রয়েছে জানিয়ে পাকিস্তান দূত এ বিষয়ে ঢাকার সহায়তা চান। বাংলাদেশ-পাকিস্তান বর্তমান বাণিজ্য সাড়ে ৭০০ মিলিয়ন ডলার থেকে আরও বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন এবং কিছু প্রস্তাবও করেছেন- কালকের বৈঠকে এমনটাই জানা গেছে। তবে সচিবের ওই আলোচনায় বাংলাদেশের বড় দাবি একাত্তরের অপরাধের জন্য ইসলামাবাদের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার বিষয়ে হাইকমিশনার বরাবরের মতো নীরব ছিলেন।