Bangladesh
বর্তমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরা নিরাপদ নয় : যুক্তরাষ্ট্র
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৬ আগস্ট ২০২৩ : বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিরাপদ নয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।
শুক্রবার ২৫ আগস্ট ঢাকার মার্কিন দূতাবাস থেকে এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সহিংসতা, ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যাভিযানের ৬ বছর পূর্ণ হলো আজ। সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে বহনযোগ্য অল্পকিছু জিনিস নিয়ে পালাতে বাধ্য করেছিল শাসকদের গণহত্যা। বাংলাদেশের জনগণ সহানুভূতি এবং মানবতার হাত বাড়িয়ে তাদের স্বাগত জানিয়েছিল। প্রায় এক মিলিয়ন উদ্বাস্তুর প্রতি আতিথেয়তা অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের জনগণ। যুক্তরাষ্ট্র এ উদারতার প্রশংসা করে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশকে তার এই প্রচেষ্টায় সমর্থন জানাতে সমবেত হয়েছিল। আমেরিকার জনগণ ২০১৭ সাল থেকে এই অঞ্চল জুড়ে উদ্ভূত মানবিক সংকটের প্রতিক্রিয়ায় ২ দশমিক ১ বিলিয়নের ডলারেরও বেশি অবদান রেখেছে। এর মধ্যেই রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয়দাতা স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য ১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের এই সমর্থন অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে আশ্রয় খুঁজে ফেরা রোহিঙ্গারা দীর্ঘকাল ধরে ভুগছে। মর্যাদার সঙ্গে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাওয়া, সপরিবারে শান্তিতে বাস করা এবং অর্থ ও উদ্দেশ্যপূর্ণ জীবনযাপনের সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। সেই লক্ষ্যে নিষেধাজ্ঞা জারি, আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আদালতের সমর্থনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র ভুক্তভোগীদের জন্য ন্যায়বিচার, নৃশংস অপরাধীদের জন্য জবাবদিহিতা এবং সংকটের সমাধান খুঁজে পেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মিয়ানমারের অবস্থার উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এবং প্রান্তিক এ জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছে। অবশ্যই বাংলাদেশ সরকার ও রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানকারী বাংলাদেশি জনগোষ্ঠীর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।
বিশ্বজুড়ে অন্যান্য সংকট যেহেতু সীমিত সম্পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, সেই কারণে রোহিঙ্গারা তাদের আশ্রয়দানকারী জনগোষ্ঠী এবং নিজ পরিবারের অর্থনৈতিক কল্যাণে কীভাবে অবদান রাখতে পারে তা চিহ্নিত করার গুরুত্ব বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে আয়-উৎপাদনমূলক কর্মকাণ্ড এবং আনুষ্ঠানিক শিক্ষা অর্জনের সুযোগ, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের নিজেদের ভবিষ্যতে আরও বড় অবদান রাখার লক্ষ্যে রোহিঙ্গা সামাজিক সংস্থাগুলিতে তাদের অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা করা। যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য টেকসই সমাধান নিশ্চিত করতে সর্বোত্তম চর্চা, ধ্যান-ধারণা এবং সংস্থান বিনিময়ে উন্মুখ।