Bangladesh
সাঈদীর মৃত্যুর পর জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডবে ১৫ লাখ টাকার ক্ষতি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৭ আগস্ট ২০২৩ : মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুর পর তার মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) ও শাহবাগ মোড়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে কেন্দ্র করে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। তবে, জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে ৫১৯ রাউন্ড রাবার বুলেট ব্যবহারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। এছাড়া ভাঙচুর-অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় ১৪-১৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করছে।
ঘটনার সময় ১৪২ রাউন্ড সিসা বুলেট, ১৩টি লংগ্যাসের সেল, ২১টি শর্টগ্যাসের সেল, ৩৯টি সফট কাইনেটিক প্রজেক্টাইল, ২৩টি সেভেন ব্যাং গ্রেনেড এবং ৩০টি সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে বলে শাহবাগে দায়ের করা মামলা সূত্রে তথ্য পাওয়া গেছে।
ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশ জানিয়েছে, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মরদেহের গোসল শেষে পরিবার প্রস্তুতি নেয় পিরোজপুর নিয়ে যাবে। তখন বিএসএমএমইউ ও শাহবাগে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া কয়েক হাজার জামায়াত-শিবিরকর্মী দাবি তোলেন যে, ‘জানাজার নামাজ পড়ে মরদেহ নিতে চাই।’ তখন পুলিশ তাদের সেখানে (শাহবাগ চত্বর) জানাজার নামাজ পড়তে বলে। রাত সোয়া ২টার দিকে তারা জানাজার নামাজের পরিবর্তে আধা ঘণ্টা ধরে মোনাজাত করেন। তারা বলেন, আমরা জানাজা নামাজ পড়বো না মোনাজাত করেছি, পরে আমরা গায়েবানা জানাজা নামাজ পড়বো।
‘কিন্তু যখন মরদেহ গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া জন্য বের করা হয়, তখন হাজার হাজার জামায়াত-শিবির নেতাকর্মী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়েন। তারা মরদেহ পিরোজপুরে নিয়ে যেতে দেবেন না। এসময় মরদেহবাহী গাড়ির সঙ্গে থাকা পুলিশ অফিসার ও সদস্যদের ওপর হামলা করেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। গাড়ি ভাঙচুরও শুরু করেন তারা। এ হামলায় ডিসি রমনাসহ পুলিশের বেশ কয়েকজন সিনিয়র অফিসার আহত হন। তারা পুলিশের ৪-৫টি গাড়ি ভাঙচুর করেন। দুটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশ ধৈর্যসহকারে এ তাণ্ডব সহ্য করে।’
একপর্যায়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কথা মাথায় রেখে ভাঙচুর-অগিকাণ্ড ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে পুলিশ। কিছু টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে সাঈদীর মরদেহ পিরোজপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন জাগো নিউজকে জানান, সাঈদীর মৃত্যুর পর বিএসএমএমইউতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করে। একপর্যায়ে তারা হাসপাতালের গেটের সামনে উসকানিমূলক স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। গভীর রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, বিএসএমএমইউ ও বারডেম হাসপাতালের উদ্দেশে আসা জরুরি রোগী ও স্বজনরা হাসপাতালে যেতে না পেরে আর্তনাদ করতে থাকেন। আন্দোলনকারীদের রাস্তা ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালে পুলিশের সঙ্গে তারা বেপরোয়া ও মারমুখী আচরণ করেন।