Bangladesh
সাবেক স্বামীর পরিকল্পনায় নারী কর কর্মকর্তাকে অপহরণ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৭ আগস্ট ২০২৩: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কমিশনার মাসুমা খাতুন অপহৃত হন সাবেক স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হারুন অর রশিদের পরিকপনায়। তার রাগ-ক্ষোভ ছিল মাসুমার ওপর। সেই ক্ষোভ থেকেই মাসুমা খাতুনকে অপহরণ করে শারিরীক নির্যাতন চালাবার পরিকল্পনা করেন। মাসুমা ১৭ আগস্ট অপহৃত হওয়ার পরদিন নিজ বুদ্ধিমত্তায় মুক্তি পান। ততক্ষণে দুর্বৃত্তরা পিটিয়ে তার এক পা ভেঙ্গে দিয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থান জখম করেছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, হাতিরঝিলে ৫০ হাজার টাকায় একটি বাসা ঠিক করা হয়। কৌশলে নেওয়া হয় ড্রাইভার মাসুদকে। কয়েকদিন আগে মাসুমা তাকে চাকুরিচ্যুত করেন। এ কারণে মাসুদ মাসুমার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। এই মাসুদের নেতৃত্বে অপহরণ মিশনে অংশ নেয় সাতজন। গত ১৭ আগস্ট অপহরণের রাতে তাকে ওই বাসায় নেওয়া সম্ভব না হওয়ায় নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এলাকার একটি গ্যারেজে নেওয়া হয় এবং সেসময় গাড়িতেই করা হয় মারধর।
পরদিন মাদারটেক এলাকায় যাওয়ার পর সেখানে ওই নারী কর্মকর্তার চিৎকারে এলাকাবাসীর হাতে আটক হয় তিনজন। পালিয়ে যায় চারজন। অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় এরপর মাসুমা রমনা থানায় মামলা করেন। মামলার প্রধান আসামি মাসুম ওরফে মাসুদসহ জড়িত তিনজনকে গ্রেফতারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র্যাব। গ্রেফতার তিনজন হলো মো. মাসুম ওরফে মাসুদ (৪২), আব্দুল জলিল ওরফে পনু (৪৮) এবং হাফিজ ওরফে শাহনি (৪৮)।
শনিবার র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ১৭ আগস্ট রাত সোয়া ৮টার দিকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) যুগ্ম কর কমিশনার মাসুমা রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে অপহৃত হন। অপহরণের ১৮ ঘণ্টা পর গত ১৮ আগস্ট রাজধানীর মাদারটেক এলাকা থেকে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী নিজেই তার সাবেক গাড়িচালক মাসুদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে রাজধানীর রমনা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। আটক সাইফুল ইসলাম, আবু বকর সিদ্দীক ও ইয়াছিন আরাফাত ওরফে রাজুকে গ্রেফতার দেখায় রমনা থানা পুলিশ।
র্যাব জানায়, শুক্রবার (২৬ আগস্ট) গভীর রাতে মামলার প্রধান আসামি মাসুম ওরফে মাসুদের সহযোগী আব্দুল জলিল ও হাফিজকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি আরও বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার মাসুদ জানান, তাকে চাকরিচ্যুতির পর ভুক্তভোগীর প্রথম স্বামী হারুন অর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি ভুক্তভোগী নারী কর কর্মকর্তাকে উচিত শিক্ষা দিতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকার একটি বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য মাসুদকে বিপুল পরিমাণ অর্থ ও উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখান।