Bangladesh
আগামী বছরই আংশিক অপরাশেনে যেতে পারে মাতারবাড়ি দূর সমুদ্র বন্দর
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৮ নভেম্বর ২০২০: করোনাকালীন স্থবিরতা কাটিয়ে আবারও পুরোদমে সচল হতে শুরু করেছে মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের কাজ।
চট্টগ্রাম বন্দর আগামী মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য নির্মিত তিনটি জেটিসহ নতুনভাবে তৈরি করা ১৫ কিলোমিটারের চ্যানেল বুঝে পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে আগামী বছর থেকেই প্রাথমিক অপারেশনে যেতে পারে মহেশখালী মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। আর বন্দরের পূর্ণাঙ্গ কাঠামো নির্মাণের কাজ ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে সম্পন্ন হবে।
জানা যায়, ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য তৈরি করা ৩টি জেটিসহ পুরো চ্যানেল বন্দরের কর্তৃপক্ষ বুঝে নেবে চলতি বছরই। ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের পাশাপাশি দায়িত্ব বুঝে নিতে ১৬ নভেম্বর দেশে আসবেন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিদেশি বিশেষজ্ঞরা।
পূর্ণাঙ্গভাবে পুরো চ্যানেলটি হস্তান্তর করা হবে আগামী বছর মে মাসের মধ্যে। এরপর থেকেই পুরোদমে চ্যানেলের কার্যক্রম এবং কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ শুরু হবে।
মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের ১৭ হাজার কোটি টাকার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার যোগান দিচ্ছে জাইকা। ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ চূড়ান্ত অপারেশনে যাবে সমুদ্র বন্দরটি।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর তার সক্ষমতার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি যেভাবে বিকশিত হচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন বন্দরের প্রয়োজন। জাতির আগামীর সেই স্বপ্ন পূরণ করবে ‘মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর’।
বিষয়টি স্পষ্ট করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ জানান, 'আমাদের আমদানি-রফতানির ৯২ ভাগই চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। কিন্তু দেশের অর্থনীতি যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের এগিয়ে চলা সম্ভব হচ্ছে না। এর সক্ষমতা একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে আরও বন্দর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেয়া হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর ও পতেঙ্গা বে-টার্মিনাল নিয়ে কার্যক্রম চলছে।'
'মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর প্রকল্প একটি সময়োচিত পদক্ষেপ। বঙ্গোপসাগর ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন আমাদের অর্থনীতির যে গতি, আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যেভাবে হচ্ছে, এ অবস্থায় কর্ণফুলী নদীভিত্তিক চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নির্ভর করার অবস্থায় আমরা আর নেই। গভীর সমুদ্রবন্দর আমাদের সময়ের দাবি ছিল। অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য আমাদের এই বন্দরের প্রয়োজন ছিল। এটি একটি অবশ্যম্ভাবী দাবি। এটি ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা আর বৃদ্ধি করা সম্ভব নয়।'