Bangladesh
জাপানি মায়ের কাছে নয়, বাংলাদেশি বাবার কাছে থাকতে চায় মেজো মেয়ে
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩: বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের মধ্যে দুই সন্তানকে নিয়ে টানাহেঁচড়া চলছে কয়েক বছর ধরে। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি আদালত রায় দিয়েছেন, দুই সন্তান তাদের মায়ের কাছে থাকবে। তবে সেই দুই শিশুর মধ্যে ছোট মেয়ে লায়লা লিনা বাবার কাছে থাকতে চায় বলে জানিয়েছে। তিন বোনের মধ্যে ছোটো শিশুটি জাপানে তাদের নানীর কাছে আছে।
লায়লা লিনা বলে, আমি আমার বাবার কাছে থাকতে চাই। আমার বাবাকে আমি অনেক ভালোবাসি। মায়ের কাছে যেতে চাই না। বৃহস্পতিবার ঢাকার অধস্তন আদালত প্রাঙ্গণে বাবার সঙ্গে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিকদের সামনে একথা বলে লায়লা লিনা। এসময় বাবা ইমরান শরীফ বলেন, লায়লা আমার কাছে থাকতে চায়। মায়ের কাছে যাবে না। কিন্তু ওর মা ওর ওপর প্রেশার ক্রিয়েট করছে। কিন্তু ও যেতে রাজি না। আমি বিষয়টা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
এদিকে বড় মেয়ে নাকানো জেসমিন মালিকাকে (১১) নিয়ে আদালতে আসেন মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো।
এরআগে গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে জাপানি বংশোদ্ভুত ওই দুই শিশু মায়ের জিম্মায় থাকবে বলে রায় দেন।
উল্লেখ্য, মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর সঙ্গে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ইমরান শরীফের বিয়ে হয় ২০০৮ সালে। দাম্পত্য কলহের জেরে ২০২০ সালের শুরুতে বিচ্ছেদের আবেদন করেন এরিকো। ১২ বছরের সংসারে তাদের তিন সন্তানের জন্ম হয়। ইমরান স্কুলপড়ুয়া বড় দুই মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন। ছোট মেয়ে জাপানে এরিকোর সঙ্গে থেকে যান।
এরপর ওই দুই মেয়েকে জিম্মায় পেতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে গত বছর জুলাই মাসে বাংলাদেশে আসেন এই জাপানি নারী। তিনি হাই কোর্টে রিট আবেদন করলে তাদের সমঝোতায় আসতে বলেন বিচারক। কিন্তু ওই দম্পতি সমঝোতায় না আসায় কয়েক মাস ধরে শুনানির পর হাই কোর্ট দুই সন্তানকে বাবার হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়। পাশাপাশি মা যাতে সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে বাবাকে খরচ দিতে বলা হয়। হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন শিশুদের মা নাকানো এরিকো।