Bangladesh
গ্রেফতার এড়াতে রিকশাচালক-রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন জঙ্গি এমদাদুল
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১: ময়মনসিংহের একটি কলেজ থেকে স্নাতক (বিএ) পাস করে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেছিলেন বৃহষ্পতিবার রাজধানীর মহম্মদপুর থানার বসিলায় আটক জঙ্গি নেতা এমদাদুল হক ওরফে উজ্জ্বল মাস্টার। জঙ্গি সংশ্লিষ্টতায় ওই স্কুল থেকে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়। ২০০২ সালে মুক্তাগাছায় এক জঙ্গি নেতার বয়ান শুনে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন এবং জঙ্গি নেতা শায়খ আব্দুর রহমানের কাছে বায়াত নেন। এরপর জামালপুরে একটি আস্তানায় প্রশিক্ষণ নেন তিনি। জঙ্গিবাদে ব্যাপক তৎপর থাকায় দ্রুত তিনি ময়মনসিংহ অঞ্চলের নেতা হয়ে ওঠেন।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলার সিটি ডেভেলপমেন্ট হাউজিংয়ের একটি আবাসিক ভবন থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। তার বাসা থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি, রাসায়নিক দ্রব্য, দেশে তৈরি বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, উগ্রবাদী বই ও নগদ তিন লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
একইদিন বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এলিট ফোর্সটির লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, গত ৪ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহে গ্রেফতার চার জঙ্গিসহ জেএমবির ১০ সদস্য তার কাছ থেকে বায়াত গ্রহণ করেন। এই ১০ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন।
তিনি আরও বলেন, জঙ্গিরা বিভিন্ন সময় লুট, ছিনতাই ও ডাকাতির মাধ্যমে সংগঠনের অর্থ জোগাড় করছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও রাজশাহীতে অভিযান চালানো হয়। বর্তমানে গ্রুপে গ্রুপে বিচ্ছিন্ন পুরোনো জেএমবি সদস্যরা সংগঠন চাঙা করার চেষ্টা করছে।
২০০৩ সালে মুক্তাগাছায় ব্র্যাক অফিসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন জঙ্গি এমদাদুল হক। এছাড়া নাশকতা ও জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা-ময়মনসিংহের বিভিন্ন থানায় ২০০৭, ২০১২, ২০১৫ ও ২০২০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
২০০৭ সালে এমদাদুল হক তার নিকটাত্মীয় রফিক মাস্টারকে হত্যা করেন। রফিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তাদের (জেএমবির) বেশ কয়েকজন জঙ্গি সদস্যকে ধরিয়ে দেন। পরে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে রফিক মাস্টারকে হত্যা করা হয়। এরপর ২০০৭ সালে এমদাদুল হকের বিরুদ্ধে মামলা হলে তিনি গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে যান। ২০০৮ থেকে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় নাম পরিবর্তন করে ছদ্মবেশে অবস্থান করেন। এ সময় তিনি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী, খেলনা বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, রিকশাচালক ও রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন।