Bangladesh
ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে বিতর্কে জড়ালেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১১ মার্চ ২০২২: শতবর্ষী উন্নয়ন পরিকল্পনা ডেল্টাপ্ল্যানে ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে কোনো বক্তব্য না থাকার বিষয়কে কেন্দ্র করে বিতর্কে জড়ান পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম এবং জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ক প্রধান উন্নয়ন গবেষক ড. এস নজরুল ইসলাম। এ সময় ফারাক্কা বাঁধকে অন্য দেশের ইস্যু বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) পানি বিষয়ক এক সেমিনারে এ বিতর্কে জড়ান তারা। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) সেমিনারটির আয়োজন করে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থার কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারের বিষয় ছিল, ‘বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। ড. এস নজরুল ইসলাম এতে মুখ্য আলোচক ছিলেন। বিষয়ের ওপর একটি দীর্ঘ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তিনি।
ড. এস নজরুল ইসলাম বলেন, ভারতের ফারাক্কা বাঁধ পানির সংকটসহ বিভিন্ন ভাবে বাংলাদেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অথচ সরকারের ১০০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনায় এ বিষয়ে একটি ‘বর্ণ’ পর্যন্ত নেই।
তিনি বলেন, ভারতীয় বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, ৪০ বছর বয়স হলেই নদীর বাঁধ পর্যালোচনা করতে হয়। ফারাক্কার বয়স ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। অথচ বাঁধটি উৎপাটনের বিষয়ে ডেল্টাপ্ল্যানে একটা সাধারণ মন্তব্যও নেই।
ড. এস নজরুল ইসলামের মতে, ডেল্টাপ্ল্যানের রূপকল্প সঠিক হয়নি। এতে তথ্য ঘাটতি আছে, সমন্বয় নেই। ডেল্টাপ্ল্যান তৈরি করেন ড. শামসুল আলম। এজন্য ড. এস নজরুল ইসলামের এ বক্তব্যকে ঢালাও, বাস্তবতা বিবর্জিত এবং নিষ্ঠুর মন্তব্য বলে মনে করেন ড. শামসুল আলম। তিনি বলেন, অনেক কিছু না জেনেই এ ধরনের মন্তব্য করেছেন ড. নজরুল। ফারাক্কা বাঁধ ভিন্ন দেশের ইস্যু। এ ইস্যুতে বাংলাদেশের ডেল্টাপ্ল্যানে কিছু থাকার কথা নয়। অথচ ড. নজরুল ফারাক্কা বাঁধ ‘ডিমলিশ’ করার পরিকল্পনা নেই কেন সে প্রশ্ন তুলেছেন।
ড. শামসুল আলম বলেন, দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে দেশের স্বার্থ বিবেচনা নিয়েই ডেল্টাপ্ল্যান করা হয়েছে। এটিই সব উন্নয়নের নির্দেশক হিসেবে কাজ করছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য হিসেবে সরকারের ১০০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা ডেল্টাপ্ল্যনের প্রধান সমন্বয়ক ছিলেন ড. শামসুল আলম।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্যের পর বির্তকটাকে আরও এগিয়ে নেন ড. এস নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ফারাক্কা ভিন্ন দেশের ইস্যু হতে পারে না। আন্তর্জাতিক আইনে রয়েছে, অভিন্ন নদীর ক্ষেত্রে কোনো দেশ এমন কোনো কাজ করতে পারবে না যাতে অন্যদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তার প্রশ্ন, ফারাক্কা নিয়ে কথা বলা না গেলে গঙ্গা ব্যারেজ নিয়ে কেন কথা বলা হচ্ছে। অবশ্য এরপর আর কোনো কথা বলেননি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী।