Bangladesh
বন্যায় সিলেটের ৭ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২০ মে ২০২২: পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যার পানি সিলেটের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ঢুকে পড়েছে। যে কারণে সরকারি ঘোষণা ছাড়াই বন্ধ হয়ে গেছে জেলার সাত শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম।
ইতিমধ্যে জেলার পাঁচ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। অপরদিকে ২০০ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যা দুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ কারণে জেলার অন্তত সাত শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গত ১০ মে থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ শুরু হয়, যা এখনো চলমান। একই সঙ্গে উজান থেকে নামছে ঢল। এতে গত ১১ মে থেকেই সিলেটের নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যেতে শুরু করে। আর গত ১৩ মে থেকে পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করে সিলেট নগর। এখন বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সিলেট সদর উপজেলার লামা আকিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুলতানা রাবিয়া জানান, তার স্কুলের ক্লাসরুমের ভেতরেই হাঁটুজল রয়েছে। একারণে গত সোমবার থেকে বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এবারের বন্যার কারণে তার আশপাশের স্কুলগুলোরও একই অবস্থা। রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তলিয়ে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ হয়ে গেছে। গত ১৮ বছরের মধ্যে এত পানি দেখেননি বলে জানান এই প্রধান শিক্ষক।
বন্যার কারণে নগরের বেশকিছু কিন্ডারগার্টেন স্কুলও বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে নগরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের নবাব রোডস্থ আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কলাপাড়াস্থ জালালাবাদ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, লামাপাড়াস্থ সানরাইজ স্কুল, ঘাসিটুলা মাদরাসা, ঘাসিটুলা গ্রিনবার্ড স্কুলসহ এই ওয়ার্ডেই অন্তত ১২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১ হাজার ৪৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৪০০টি পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ ও সিলেট সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন এরশাদ বলেন, বন্যাকবলিত এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পানি চলে আসায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে। বন্যায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জেলার সব বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা আসেনি। যে বিদ্যালয়গুলোতে এখনো পানি ওঠেনি, সেগুলোকে প্রয়োজনে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে।