Bangladesh
নিউজিল্যান্ড হামলাঃ সন্ত্রাসির হাতে বাংলাদেশিরাও আক্রান্ত
দুই মসজিদে বন্দুকধারী এক অস্ট্রেলিয়ানের হামলায় প্রাণ হারান পাঁচজন বাংলাদেশের মানুষ।
শুধু কি বাংলাদেশের মানুষ, এই দেশের ক্রিকেট দল সেই সময়
নিউ জিল্যান্ডে সফর করছিল। অল্পের জন্য রক্ষা পান তারা।
তামিম, বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যানদের মধ্যে একজন, নিজের টুইটার পেজে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার জানান।
বেশ আতঙ্কের দিন ছিল সেটি। শহরে টেস্ট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হওয়ার ছিল।
তবে, এই ঘটনার পরে আর খেলাটি হয়নি।
বাংলাদেশের দল এই দেশে ফিরেও এসেছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে, সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ব্যাক্তিদের জন্য শোক প্রকাশ করেন উনি।
হাসিনা- ট্রুডোর জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইঃ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সন্ত্রাস উচ্ছেদে একযোগে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
সোমবার সকালে দু’নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত টেলিফোন আলাপে তাঁরা এই আহবান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচাচের্র মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
প্রায় ২০ মিনিট তাঁদের মধ্যে কথোপকথন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ট্রুডো তাঁর ফোনকলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। কেননা শুক্রবারের সেই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা থেকে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল অল্পের জন্য রক্ষা পায়। যে হামলায় ৪ জন বাংলাদেশীসহ ৫০ জন নিহত এবং বহু আহত হয়।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সদস্যদের রক্ষা পাওয়ার ঘটনায় স্বস্তি প্রকাশ করেন। সেই সংগে নিউজিল্যান্ডের দু’টি মসজিদে হামলার ঘটনায় বাংলাদেশীসহ ৫০ ব্যক্তি নিহত হওয়ায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, জাস্টিন ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এজন্য সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত। উত্তরে কানাডার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অভিমত সমর্থন করে বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসের মূল উৎপাদনে একযোগে কাজ করতে হবে।’
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে তাঁর সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশ সকল ক্ষেত্রেই সন্ত্রাসকে নিন্দা জানায়।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি শান্তি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এবং আমরা আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে সকল তীর্থ স্থান যেমন-মসজিদ, মন্দির, গীর্জা এবং প্যাগোডা রক্ষার জন্য সতর্ক করে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ইসলামে কোনভাবে এবং কোন ধরনেরই সন্ত্রাসের কোন সুযোগ নেই এবং সন্ত্রাসীর কোন ধর্ম নেই এবং ভৌগলিক সীমারেখা নেই।
প্রধানমন্ত্রী ট্রুডোকে বলেন যে, বাংলাদেশ সরকার সমাজ থেকে সন্ত্রাসের মূল উৎপাটনের মাধ্যমে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা বিধানে সকলকে নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া সফরে সতর্কতাঃ
বাংলাদেশের সরকার অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরের বিষয় দেশের মানুষকে সতর্ক করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরতদের সার্বক্ষণিক, বিশেষত জনসমাগমস্থলে সজাগ থাকতে জানিয়েছে বাংলাদেশের সরকার।
ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নিউজিল্যান্ড ভ্রমণে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা জারি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পররষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলায় আক্রান্ত বাংলাদেশিদের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরতে সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ডেকে একথা বলা হয়।
তিনি বলেন, সেখানে যদি কোনো বাংলাদেশি ভ্রমণ করতে চায় আমরা তাদের বলবো আপনারা সেটি বিশেষ বিবেচনায় সতর্কতার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেবেন।