Bangladesh
পাচার করা অর্থ ফেরানোর সুযোগের সমালোচনায় সংসদ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১৩ জুন ২০২২: বাজেটে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরৎ আনার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে তার বিরোধিতা করেছেন সংসদ সদস্যরা।
বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেওয়াকে এক ধরনের দুর্নীতি বলেও মন্তব্য করেছেন তারা। যারা অর্থপাচার করেছে, অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থারও দাবি করেছেন কয়েকজন সদস্য।
রোববার (১২ জুন) জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি ও বিরোধী দলের কয়েকজন সদস্য এসব কথা বলেন।
সরকারি দলের সদস্য ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরত আনার সুযোগ দেওয়া এক ধরনের দুর্নীতি। যারা অবৈধভাবে বিদেশে টাকা পাচার করে তারা ভালো মানুষ নয়। সুতরাং এ সুযোগ একবার দিলে বছরের পর বছর বিদেশে অর্থপাচার হবে এবং স্বল্প ট্যাক্স দিয়ে তা সাদা করবে অসাধু ব্যবসায়ী ও জনগণ।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফেরাতে সরকার যে উদ্যোগ রেখেছে তার কঠোর সমালোচনা করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান।
তিনি বলেন, বাজেটে অর্থপাচারকারীদের দায়মুক্তির যে সুযোগ রাখা হয়েছে, এই সুযোগ থাকলে এই অর্থ চোরেরা হয়ে যাবে শ্রেষ্ঠ করদাতা। অর্থমন্ত্রী বাজেটে যে দায়মুক্তি নিয়ে আসছেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে নিয়ে আসলে দায়মুক্তি দেওয়া হবে। এটিকে আমি সমর্থন করি না। যারা অর্থপাচার করেছে, যারা অবৈধভাবে অর্থ আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। না হলে মানি লন্ডারিং আইন-তো কোনো দরকার নেই বাংলাদেশে।
জাতীয় পার্টির ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারি বিদেশে পাচার হওয়া টাকা দেশে আনার ক্ষেত্রে দায়মুক্তি প্রদানের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, কেউ ব্যাংক ডাকাতি করে, দুর্নীতি করে বিদেশে টাকা পাচার করে। তাদের বিরুদ্ধে কি কোনো আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও ফৌজদারী মামলা রয়েছে। তারা এই সুবিধা ভোগ করতে পারবে না।
গণফোরামের মোকাব্বির খান বলেন, দেশে যদি একজন বড় দুর্নীতিবাজকে ধরে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যেত, তবে একদিনে দেশে দুর্নীতি ৫০ ভাগ কমে যেত। চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, বড় বড় দুর্নীতিবাজদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেন, দেশে ৫০ ভাগ দুর্নীতি না কমলে সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করব।