Bangladesh
উভয় সংকটে সরকার, লকডাউন মানতে চায় না কেউ
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৩ আগস্ট ২০২১: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন বা বিধিনিষেধ ১০ দিন না যেতেই হাটু ভেঙ্গে পড়েছে। বিশেষ করে রফতানীমুখী শিল্প খুলে দেয়ার পর আর কেউই লকডাউন কার্যকর আছে বলে বিশ্বাস করতে চান না। অপরদিকে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের হার ক্রমেই বৃদ্ধি পেতে থাকায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে জোরালো সুপারিশ করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার লকডাউনের একাদশ দিনে দলে দলে লোক রাস্তায় নেমে পড়ায় পুলিশ অস্বস্তিবোধ করছে।
বিধিনিষেধের ১০ দিনের মাথায় রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দিয়েছে সরকার। এখন মালিক-শ্রমিকরা দোকান-রেস্তোরাঁ, গণপরিবহন খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। চলমান লকডাউনের মেয়াদ শেষে ৫ আগস্টের পর কেউ আর বিধিনিষেধ মানতে চান না।
কিন্তু এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণে আসেনি করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি। বরং দিনের পর দিন পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত হয়ে আড়াইশ মানুষ মারা যাচ্ছেন, আক্রান্ত হিসাবে শনাক্ত হচ্ছেন ১৫ হাজারের মতো। এর মধ্যে বিধিনিষেধ আরও ১০ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
এর ভেতরে রফতানিমুখী শিল্পকারখানার কর্মীদের কর্মস্থলে ফেরাতে শনিবার রাত থেকে রোববার রাত পর্যন্ত বাস এবং সোমবার দুপুর পর্যন্ত লঞ্চ চালু রেখেছিল সরকার।
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায়ে চলে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরে বিধিনিষেধ আরোপ করে তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে সরকার। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে আট দিনের জন্য শিথিল করা হয়েছিল বিধিনিষেধ। এরপর আবার গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে ১৪ দিনের বিধিনিষেধ দেয়া হয়। আগামী ৫ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হবে সেই লকডাউন।
বিধিনিষেধে সব ধরনের গণপরিবহন, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। খাদ্যপণ্য উৎপাদন-প্রক্রিয়াকরণ, চামড়া পরিবহন-সংরক্ষণ ও ওষুধ খাত ছাড়া বন্ধ রয়েছে সব ধরনের শিল্পকারখানা। তবে ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা খুলেছে। বন্ধ রয়েছে দোকান ও শপিংমল। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষের বাইরে বের হওয়াও নিষেধ।
এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘সবাই তাদের ভয়েস রেইজ করতে চাইবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সরকার সিদ্ধান্ত নেবে- কী করলে ভালো হবে। সবার আগে দরকার আমাদের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ।’
তিনি বলেন, ‘লাখ লাখ লোক রফতানিমুখী শিল্প-কারখানাগুলোয় কাজ করেন। বিদেশি ক্রেতারা রয়েছে, আমাদের শিল্প বন্ধ থাকলে এই অর্ডারগুলো অন্য দেশে চলে যাবে। আমাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এজন্য এটা খুলতে হয়েছে। একেকজনের বাস্তবতা একেক রকম, সেটা চিন্তা করতে হবে। সবকিছুর ওপর বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের করোনা।’