Bangladesh
ভবিষ্যৎ মহামারী মোকাবেলায় বৈশ্বিক চুক্তিতে পৌঁছার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৩ মে ২০২২: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভবিষ্যৎ মহামারী মোকাবেলায় একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত সাড়া প্রদানের জন্য ‘মহামারী চুক্তি’তে পৌঁছার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রোববার পঁচাত্তরতম বিশ্ব স্বাস্থ্য অ্যাসেম্বলি’র উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে সম্প্রচারিত একটি ভিডিও বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যত মহামারীগুলো মেকাবেলার লক্ষ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায়সঙ্গত সাড়া প্রদানের জন্য আমাদের অবশ্যই মহামারী চুক্তিতে পৌঁছাতে কাজ করতে হবে।’
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ২২-২৮ মে পর্যন্ত এ অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর পর এটিই প্রথম ইন-পারসন স্বাস্থ্য বিষয়ক সমাবেশ।
শেখ হাসিনা বলেন, লাখ লাখ মানুষকে টিকাদানের প্রচেষ্টার বাইরে রেখে তারা টেকসইভাবে পরিস্থিতি কাটিয়ে ওঠা নিশ্চিত করতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে, তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়াতে প্রযুক্তি এবং কারিগরি জ্ঞান শেয়ার করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারী এখনও সারা বিশ্বে জীবন ও জীবিকার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার সরকার স্বাস্থ্যসেবা, আর্থিক ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার সমন্বয়ের মাধ্যমে মহামারীর হুমকি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় সাপেক্ষ ২৮টি উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যা আমাদের জিডিপির প্রায় ৬.৩ শতাংশ। আমরা প্রায় ৪০ মিলিয়ন ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে নগদ ও অন্যান্য সহায়তা দিয়েছি। আমরা আমাদের জনগণকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন সরবরাহ করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয় শিবিরে মহামারী নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার সরকার আমাদের জাতীয় বাজেট থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী কোভ্যাক্স-এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দান করার জন্য বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের লক্ষ্য অনুযায়ী জনসংখ্যার শতভাগেরও বেশি লোককে ইতিমধ্যে টিকা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ফ্রন্টলাইন পরিসেবা প্রদানকারীদের নিবেদিত কাজের জন্য কৃতজ্ঞ।’
বাংলাদেশ ওষুধ, পিপিই ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের পাঠিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি যে, ভ্যাকসিনকে বিশ্বব্যাপী গণসামগ্রী হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্প্রদায়কে অবশ্যই ব্যাধির চাপের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের বিষয়ে বাড়তি মনোযোগ দিতে হবে। অবহেলিত গ্রীষ্মমকালীয় রোগসহ চিকিৎসা গবেষণায় সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্সকে সমন্বিতভাবে মোকাবেলা করতে হবে।