Bangladesh
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করে দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২১ মার্চ ২০২২: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ (২১ মার্চ, সোমবার) দেশের বৃহত্তম ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধনের পর দেশের শতভাগ জনগণকে বিদ্যুতের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন।
পরিবেশবান্ধব আল্ট্রা-সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার মাধ্যমে, বাংলাদেশ সরকার শতভাগ জনগণকে বিদ্যুতের আওতায় আনার অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আরেকটি মাইলফলক অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দেশের সর্বাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র’ উদ্বোধন করেন।
এর আগে বেলা পৌনে ১১টায় পায়রায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানায় পুলিশের একটি দল। পরে সুসজ্জিত জেটিতে রঙিন পালতোলা ২০০ নৌকা থেকে পতাকা নাড়িয়ে এবং সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিবাদন জানানো হয়। পায়রায় অবতরণ করে প্রধানমন্ত্রী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন করেন এবং এর নামফলক উন্মোচন করেন। এসময় এক হাজার ৩২০টি পায়রা ওড়ানো হয়।
ছবি: পিআইডি
করোনা মহামারির মধ্যে টুঙ্গিপাড়ার বাইরে এই প্রথম দেশের অন্যত্র সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পায়রায় কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর মধ্যদিয়ে ২০২০ সালেই বাংলাদেশ আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল ক্লাবে প্রবেশ করে। আলট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ধরনের বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৩তম দেশ; এশিয়ায় সপ্তম এবং দক্ষিণ এশিয়াতে বাংলাদেশ ছাড়া শুধু ভারতে এ ধরনের একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে।
এশিয়ার চীন, তাইওয়ান, জাপান ও মালয়েশিয়াতেয় আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। আলট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির কেন্দ্রগুলোতে চীন ও বাংলাদেশ ছাড়া অন্য দেশগুলো ঢাকনাযুক্ত কোল ইয়ার্ড (ডোম) ব্যবহার করে না। ডোম ব্যবহারের ফলে বাতাসের মাধ্যমে খোলা কয়লা থেকে কয়লার গুঁড়া ছড়ানোর সুযোগ কমে যায়। এটি বিশ্বের মধ্যে শুধু চীন ও বাংলাদেশ ব্যবহার করছে।
ছবি: পিআইডি
বাংলাদেশের নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) ও চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সমান অংশীদারে গঠিত বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা।
৬৬০ মেগাওয়াট করে দুই ইউনিট মিলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদনে আসে ২০২০ সালের মে মাসের ১৫ তারিখে। সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে আসে একই বছরের ৮ ডিসেম্বর। তবে সঞ্চালন অবকাঠামো নির্মাণ শেষ না হওয়ায় কেন্দ্রটি হতে ক্ষমতার চেয়ে কম বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে।