Bangladesh
মিয়ানমারে ‘গণহত্যার’ প্রতিবাদে ঢাকায় রাখাইন সমাবেশ
ঢাকা, ১১ অক্টোবর ২০২০ : মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে হত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগসহ দমানবতাবিরোধী অপরাধের’ প্রতিবাদে ঢাকায় সমাবেশ করেছে দরাখাইন কমিউনিটি অফ বাংলাদেশ’।
রোববার সকালে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে তাদের এ সমাবেশ হয়।
সংগঠনের আহ্বায়ক ক্যাঞিং সমাবেশে বলেন, আরাকানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই তাণ্ডবে তিন শতাধিক বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে।
আহত হয়েছে ছয় শতাধিক মানুষ। ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় আড়াই লাখ মানুষ উদ্বাস্তু জীবন যাপন করছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী সুকৌশলে এবং পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঢুকে নির্যাতন, ধর্ষণ, লুণ্ঠন গুলিবর্ষণসহ বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও কোনো আইনের তোয়াক্কা না করে মানবতাবিরোধী হত্যাযজ্ঞ ধারাবাহিকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে বসবাসরত রাখাইন সম্প্রদায়ের এই নেতা বলেন, মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলোকে রাখাইনে ঢুকতে না দেওয়ায় সেখানে খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
বার্মিজ সরকারের অত্যাচার-নির্যাতন আজ থেকে নয়। সেই ১৭৮৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে কুখ্যাত বার্মিজ সমন্বয়ক ওয়ানের নেতৃত্বে তৎকালীন রাখাইন রাজ্যে বসবাসকারী জনগণকে পৃথিবী থেকে চিরতরে বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্যে লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, এমনকি কোনো ধর্মীয় স্থাপনা পর্যন্ত রেহাই পায়নি। যা আজও চলমান।
এ জঘন্য অপরাধ এবং মানবতা লঙ্ঘনকারীর বিরুদ্ধে আমরা যদি প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন না করি, তাহলে তারা এই অমানবিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখবে।
সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্যাঞিং বলেন, এরপরও যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হয়, তাহলে রাখাইন জনগণ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাবে। মিয়ানমার রাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। আরাকান রাজ্যে সেনাবাহিনী ধর্ষণ, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ, গুলিবর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালাচ্ছে।
গ্রামে বসতবাড়ির ওপর বিমান হামলা হচ্ছে, জাহাজ থেকে ভারী বোমা নিক্ষেপ করা হচ্ছে, জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করার ঘটনা ঘটছে, যা আন্তর্জাতিক আইনে গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের শামিল।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ইন্টারনেট বন্ধ রেখে ‘গণহত্যার খবর’ গোপন করার চেষ্টা করছে বলেও অভিযোগ করেন ক্যাঞিং।
এই সমাবেশে যোগ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক বলেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার ঘটনায় ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসে গাম্বিয়া যখন অভিযোগ করেছে, তখন তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দাবি করছে। ইনডিপেনডেন্ট ইনভেস্টিগেটিভ মেকানিজম ফর মিয়ানমার- আইআইএমএম এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক মহলের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।