Bangladesh
শেখ হাসিনা একটি ‘শক্তি’র নাম : ওয়াশিংটন পোস্টে বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর ভূয়সী প্রশংসা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২২ : যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক যান। যুক্তরাষ্ট্রে সফরের একাংশে ভার্জিনিয়ার একটি বিলাসবহুল হোটেল অবস্থান করছিলেন তিনি। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন শেখ হাসিনা। তার সেই সাক্ষাৎকারটি অনলাইনে প্রকাশিত হয়েছে গত সোমবার (৩ অক্টোবর)। এতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে রীতিমতো প্রশংসার বন্যায় ভাসিয়েছেন সাক্ষাৎকার নেওয়া কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক।
তিনি শেখ হাসিনাকে একটি ‘শক্তি’ হিসেবে অভিহিত করে বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নারী সরকারপ্রধান হওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার চেয়ে বেশি জনসংখ্যা বিশিষ্ট একটি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া এবং অন্তত ২০ বার হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যাওয়া শেখ হাসিনা একজন দাদিও বটে। তাই নিজের ৭৬তম জন্মদিন তিনি তার ছেলে ও ১৬ বছর বয়সী নাতনির সঙ্গে উদযাপন করেছেন।
এত ব্যস্ততার মধ্যেও কীভাবে সাধারণ দাদি হওয়ার সুযোগ পান জানতে চাইলে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ওদের জন্য রান্না করি। চিকেন বিরিয়ানি আমার ছেলের বাড়িতে। আমার যে রান্নাঘর রয়েছে, তা কেবলই আমার জন্য।
ডভোরাক লিখেছেন, আমরা তার (শেখ হাসিনা) অনুবাদক এবং চিফ অব স্টাফের সঙ্গে একটি সুন্দর ঘরে বসেছিলাম। সেখানে তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বিশাল প্রতিকৃতি ছিল, যিনি বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে ১৯৭৫ সালে পরিবারের আরও ১৭ সদস্যের সঙ্গে হত্যা করা হয়। চার মেয়াদে মোট ১৮ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমানের উত্তরাধিকার বজায় রেখেছেন শেখ হাসিনা।
একটি জটিল, বিপর্যস্ত জাতিকে নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। জাতিসংঘে তিনি মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গার জন্য সাহায্য চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আশ্রয়কেন্দ্রের জীবন ভালো না। তারা (রোহিঙ্গা) স্বদেশে ফিরতে চায়। তিনি আরও বলেন, তার দেশের অভিবাসন পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের মতো নয়। এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমেরিকা... একটি বিশাল দেশ। এখানে প্রচুর জমি, প্রচুর জায়গা, কাজের সুযোগ প্রচুর। যুক্তরাষ্ট্রকে কেন অভিবাসীদের নিয়ে চিন্তিত হতে হবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৭ কোটির বেশি মানুষ নিয়ে জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে আট নম্বরে রয়েছে। আমরা কিন্তু ছোট দেশ। এসময় তার চিফ অব স্টাফ যোগ করেন, আমাদের (বাংলাদেশ) আকার উইসকনসিনের (যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য) মতো।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে সেন্সরশিপ ও শেখ হাসিনা প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ দমনে কঠোর অবস্থানের প্রেক্ষাপটে পুলিশ বাহিনীর আগ্রাসী আচরণের অভিযোগও রয়েছে। অথচ এই কঠোর অবস্থানের জেরেই ২০১৫ সালে বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীর ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতির প্রশংসা করতে গিয়ে ‘নারী হওয়া সত্ত্বেও’ মন্তব্য করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার সেই মন্তব্য নিয়ে ভাইরাল বহু মিম (কৌতুক) চালু রয়েছে এবং শেখ হাসিনার জন্য একটি গর্বের জায়গা তৈরি হয়েছে।