Bangladesh
হলি আর্টিসান হামলার ৬ বছর: বড় কোনো ঘটনা ঘটাবার সক্ষমতা এখন আর জঙ্গীদের নেই
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১ জুলাই ২০২২: আজ ১ জুলাই। ২০১৬ সালের আজকের দিনে ঘটে যায় বাংলাদেশের ইতিহাসের সব থেকে বড় জঙ্গি হামলার ঘটনা। সেদিনের ওই ভয়াল রাতে গুলশান-২ এর হলি আর্টিজান বেকারিতে এক নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় জঙ্গিরা। হামলায় নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ২২ জন। সেই দিন রাত ৮টা ৫০মিনিট থেকে ১২ ঘণ্টা রুদ্ধশ্বাস এক জঙ্গি হামলার ভয়াবহতার সাক্ষী হয়েছিল গোটা জাতি। পরে ২ জুলাই সকালে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো সদস্যদের পরিচালিত ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’ অবসান হয় জিম্মিদশার, নিহত হয় হামলাকারী ৫ জঙ্গি।
ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে বেরিয়ে আসতে থাকে জঙ্গিদের নারকীয় এই হত্যাযজ্ঞের ব্লু-প্রিন্ট। বিভিন্ন সময় এই হামলার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনের যোগসাজসের বিষয়টি আলোচনায় আসে।
তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হামলায় জড়িত জঙ্গিরা সবাই ‘হোম গ্রোন’। জেএমবির কিছু সদস্য নতুনভাবে উজ্জীবিত হয়ে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায়, যাদের ‘নব্য জেএমবি’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।
নব্য জেএমবির সদস্যদের সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা থাকলেও হলি আর্টিসানের ঘটনার পর ধারাবাহিক অভিযানে জঙ্গিদের রুখে দিতে সক্ষম হয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এসব অভিযানে অনেক নব্য জেএমবির সদস্য নিহত হয়। গ্রেফতার করা হয় আরও অনেককে।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা জঙ্গিদের সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি’।
তিনি বলেন, আইএসের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ দেশের জঙ্গিদের কখনও ছিল না। তারা শুধু প্রযুক্তির সহায়তা নিয়েছে। আমরা জঙ্গি সংগঠনের সব আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়েছি। শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের সিটিটিসি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
আসাদুজ্জামান বলেন, বড় কোনো ঘটনা ঘটাবার সক্ষমতা এখন আর বাংলাদেশী জঙ্গীদের নেই। সিটিটিসি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কল্যাণে দেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আছে। গ্লোবাল টেরোরিজম ইনডেক্সের (জিটিআই) তথ্যমতে, জঙ্গিবাদ দমনের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৪০। সবার প্রথমে আছে আফগানিস্তান। পাকিস্তান রয়েছে ১০-এ, ভারত ১২-তে, যুক্তরাষ্ট্র ২৮-এ ও যুক্তরাজ্য ৩১-এ। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ।
জঙ্গীরা ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের কোথাও কোনো ধরনের অ্যাটাক করতে সক্ষম হয়নি। তাদের সক্ষমতা থাকলে তারা অবশ্যই চেষ্টা করতো। আমরা তাদের সক্ষমতা গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছি।