Bangladesh
জিয়া শাসনামলে সশস্ত্রবাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তা হত্যার বিচার হওয়া উচিত: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৫ অক্টোবর ২০২১: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জিয়াউর রহমানের শাসনামলে সামরিক ক্যু’র অজুহাতে সশস্ত্রবাহিনীর অসংখ্য কর্মকর্তা হত্যার বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত উল্লেখ করে এজন্য জনমত সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এই বিষয়টা নিয়ে যখন দাবি উঠেছে তখন এটা নিয়ে নিশ্চই ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। এরজন্য ভাল জনমতও সৃষ্টি হওয়া দরকার। কিভাবে মানুষগুলোকে সে (জিয়াউর রহমান) হত্যা করে গেল।’
প্রধানমন্ত্রী সোমবার বিকেলে গণভবনে তাঁর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে যোগদান এবং যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫ এর পর এই বাংলাদেশে বার বার ক্যু হয়েছে এবং এই ক্যু’র নামে শুধু এয়ারফোর্সের অফিসার, সৈনিক বা কর্মচারি নয় সেনাবাহিনীরও বহুজনকে হত্য করা হয়েছে।
তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আপনারা যদি জেলখানাগুলো খোঁজ করেন যে, কোন জেলে কতজনকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাহলে দেখবেন এরকম হাজার হাজার মানুষকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। তাদের পরিবারগুলো লাশতো পায়ই নি, এরা যে গুম হয়ে গেল বা হারিয়ে গেল সেজন্য কারো কোন জবাবদিহি কখনও হয়নি।'
প্রধানমন্ত্রী সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে সেনা ও বিমানবাহিনীর কর্মকর্তা হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, 'এটা একটা আশার কথা যে এত বছর পর সবারই এই চেতনাটা এসেছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন এতকাল সবাই কেন এটা ভুলে থাকলো।'
তিনি বলেন, 'জিয়াউর রহমান তার ক্ষমতাকে নিস্কন্টক করবার জন্য এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে, এটাতো জানা কথা। শুধু সামরিক বাহিনী নয় আমাদের আওয়ামী লীগের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করেছে।'
তিনি তৎকালীন মিডিয়া এবং বিএনপি’র দিকে সমালোচনার তীর ছুঁড়ে দিয়ে জিয়া প্রসঙ্গে বলেন, 'তাকে এমন একটা ফেরেশতার মত বানিয়ে দেয়া হয়ে গেল এবং শেষকালে স্বাধীনতার ঘোষকও বানিয়ে ফেলা হলো। সেটা নিয়ে তেমন কেউে কন কথা বলেনি সেটা আমার প্রশ্ন। কারণ, আমার বাবা-মা-ভাই হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকারও আমার ছিল না। আমরাওতো তাঁদের লাশ দেখতে পারিনি। কিন্তু আমি সরকারে আসতে পেরেছি বলেই এই হত্যার (জাতির পিতা) বিচার করেছি। অপরদিকে জিয়াউর রহমান হত্যার বিচারও কিন্তু বিএনপি কখনো করেনি।'
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মিউটিনির বিচার করে যে ১১ জন সামরিক অফিসারকে ফাঁসি দিল সেটাও কিন্তু খুব অন্যায়ভাবে। কারণ, এদের অনেকে জানতই না কিন্তু রাতারাতি একটা ক্যামেরা ট্রায়াল করে ফাঁসি দিয়ে দিল।'
তাঁরা তখন প্রতিবাদ করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা তখন এটার প্রতিবাদ করেছিলাম তা তদন্ত হওয়া দরকার।'