Bangladesh
পদ্মা সেতুর ওপর হাজারো মানুষের ঢল
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২৫ জুন ২০২২: সেতু উদ্বোধনের পর পদ্মা সেতুতে হাজারো মানুষের ঢল নামে। এ সময় অনেকে হেঁটে পদ্মা সেতুতে উঠে পড়েন। পদ্মা সেতুতে উঠে সবাই নিজেকে মুঠোফোনে ক্যামেরাবন্দি করেন। শনিবার (২৫ জুন) দুপুরে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে গিয়ে এমনই চিত্র দেখা যায়।
কয়েকজন দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, 'ইতিহাসের সাক্ষী হতে পদ্মা সেতুর ওপর সেলফি তুলতে এসেছি। রাইসুল নামে এক যুবক জানান, পদ্মা সেতু আমাদের অহংকার। দীর্ঘদিন ধরে স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতুতে ওঠার। আজ সে স্বপ্ন পূরণ হলো। সেজন্য আমরা মহাখুশি।'
রোজিনা আক্তার নামে এক নারী জানান, এতদিন পদ্মা সেতু নির্মাণের খবর দেখতাম। আজ সেতুটির উদ্বোধন হয়েছে। তাই নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি।
এর আগে শনিবার (২৫ জুন) বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। দুপুর ১২টা ০৬ মিনিটে সেতু দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর জাজিরার অভিমুখে রওনা হয়। এর আগে বেলা ১১টা ৪৮ মিনিটে নিজ হাতে নির্ধারিত টোল দেন প্রধানমন্ত্রী।
২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬.১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.১০ মিটার। পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।