Bangladesh
ট্রেনে ৭ মিনিটে পদ্মা পাড়ি
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩: পদ্মা বহুমুখী সেতুতে সড়কপথে যানবাহন চালুর পরে এবার পরীক্ষামূলক শুরু হয়েছে ট্রেন চলাচল। বৃহস্পতিবার ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা ৭ মিনিটে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রা করে। বেলা ১১টা ২৭ মিনিটে পদ্মা সেতুর মাওয়া প্রান্তে যায় ট্রেনটি। ৭ মিনিটে পাড়ি দিয়ে ট্রেনটি ১১টা ৩৪ মিনিটে পৌঁছায় জাজিরা প্রান্তে।
সড়কপথের পুরো সেতুটি যেন ট্রেনটিকে ছায়া দিয়ে চলেছে। নতুন পথে রেল যোগাযোগের নতুন যাত্রায় এগিয়ে যায় পরীক্ষামূলক ট্রেনটি। মাত্র সাত মিনিটে পদ্মা সেতু পাড়ি দেওয়া ট্রেনটিকে স্বাগত জানায় দুই প্রান্তের মানুষ। চোখে-মুখে উৎসুক জনতার আনন্দের উচ্ছ্বাস। এই যেন উত্তাল পদ্মায় উৎকণ্ঠার যাত্রার অবসান। সড়কপথে যারা যাতায়াত করতে পারেন না এবার রেলপথে যাতায়াত যেন তাদের মনেও স্বস্তি নিয়ে এসেছে।
জানা গেছে, পদ্মা সেতু হয়ে আগামী অক্টোবরেই ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন দেশের সবচেয়ে বড় মেগা প্রকল্পের ট্রেন চলাচল। উদ্বোধনের দিন সুধীসমাবেশও হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এখনো সেটি চূড়ান্ত হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ৪ মে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দেয় সরকার। এছাড়া ৪৩ কিলোমিটার লুপ লাইন (স্টেশনের আগে-পরে বাড়তি লাইন) নির্মাণসহ নতুন ট্রেন চালুর জন্য ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী বগি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের ৮২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এই পথে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে কোনো রেলক্রসিং রাখা হয়নি। ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত আগের ৬টিসহ ২০টি আধুনিক স্টেশন করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ব্যয় ধরা হয় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। পরে বেড়ে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকায়।
পদ্মা সেতুর সড়ক পথ সাধারণ জনগণের জন্য খুলে দেওয়ার পর থেকে রেলওয়ে বাড়তি গুরুত্ব দেয় মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের কাজে। এরপরও ঢাকা থেকে যশোর অংশের কাজ শেষ করতে না পারায় পুরো পথের পরিবর্তে প্রথমে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ বিষয়ে প্রকল্পের পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, ‘স্টেশনগুলোর কাজ চলছে। উদ্বোধনের তিন মাসের মধ্যে প্রধান প্রধান স্টেশনগুলো চালু হয়ে যাবে। তখন ট্রেনের সংখ্যাও বাড়বে। আগামী বছর যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ এগিয়ে চলছে।’