Bangladesh

কচুরিপানা পরিষ্কারে বিলে নেমে পড়লেন ইউএনও
এক সময়ের লাল-সাদা শাপলা ও পদ্ময় ভরপর দৃষ্টিনন্দন বিলটি অবৈধ দখলদারদের দাপটে হারিয়ে ফেলেছে সৌন্দর্য। বাঁশের বেড়া আর কচুরিপানা দিয়ে বিলটি ভরে গেছে। তাই বিল পরিষ্কার ও দখলদারদের হাত থেকে আশুড়ার বিলকে উদ্ধারের জন্য সপ্তাহজুড়ে নির্দেশ দিচ্ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান। তিনি যেভাবে চাইছিলেন ঠিক সেভাবে কাজটি হচ্ছিল না। তাই শুক্রবার নিজেই নেমে পড়লেন বিলে। এক টানা সাড়ে তিন ঘণ্টা বিলের কাদাপানিতে থেকে পরিষ্কার করলেন কচুরিপানা। উচ্ছেদ করলেন অবৈধ স্থাপনাসমূহ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিলে নামতে দেখে স্থানীয় জনসাধারণসহ রাজনৈতিক নেতারাও নেমে পড়েন বিলে। তারাও যোগ দেন পরিষ্কারের পরিচ্ছন্নতার কাজে। ৩৬০ হেক্টর এলাকাজুড়ে আশুরা বিল। এখানে দেশীয় মাছ লাল খলশে, কাকিলা, ধেধলসহ বিলুপ্ত প্রায় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়।
অভিযানে অংশ নেয়া নবাবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান জানান, একজন ইউএনও বিলের কাদাপানিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা থেকে কচুরিপানা পরিষ্কার, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করবেন তা স্বপ্নেও ভাবিনি। তিনি বলেন, ঐতিহ্যবাহী বিলটি এক সময় উত্তরাঞ্চলের ভ্রমণপিপাসুদর অন্যতম দর্শনীয় স্থান ছিল। দখলদারদের কারণে বিলটি ঐতিহ্য হারিয়েছে। এটি রক্ষার দায়িত্ব স্থানীয় লোকজনের ছিল। ইউএনও মশিউর রহমানের ব্যতিক্রমী অভিযান তাদের চোখ খুলে দিয়েছে ।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, জাতীয় উদ্যানের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া এ বিলটি দেশের অমূল্য সম্পদ। এক সময় এ বিলজুড়ে ফুটত লাল-সাদা শাপলা ও পদ্ম ফুল। শীতে অতিথি পাখিরা আসত। পাখির কলরবে মুখরিত থাকত এই এলাকা। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এক দল প্রভাবশালী বিলটি দখলে নিয়েছিল। বিলটিকে বাঁশের বেড়া, মাচা দিয়ে অসংখ্য ভাগে ভাগ করে ফেলেছিল। কচুরিপানায় ভরে গিয়েছিল পুরো বিল। হারিয়ে গেছে শাপলা, পদ্ম ফুল। শীতকালে ধান চাষ করায় কীটনাশক ব্যবহারে হারিয়ে গেছে বহু দেশি প্রজাতির মাছ। অতিথি পাখি আর আসে না। তিনি বলেন, অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিল জুড়ে লাগানো হচ্ছে শাপলা ও পদ্ম। বিলটির হারানো ঐতিহ্য ফেরানোর চেষ্টা চলছে।
Image: Wikimedia Commons