Bangladesh
হাসপাতাল ছাড়লেন ইউএনও ওয়াহিদা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ১ অক্টোবর ২০২০ : প্রায় মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় আনা হয় দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমকে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে তাকে আনা হয়েছিল স্ট্রেচারে শুইয়ে। এক মাসের চিকিৎসায় তিনি আজ বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে সেই হাসপাতাল ছেড়েছেন পায়ে হেঁটে।
তার চিকিৎসকরা বলছেন, ওয়াহিদার ডান হাত ডান পায়ের শক্তি ফিরে এসেছে। যদিও শতভাগ শক্তি ফেরা সময় ও চিকিৎসাসাপেক্ষ।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে ইউএনও ওয়াহিদাকে বিদায় দেওয়ার পর তার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরো ট্রমা বিভাগের প্রধান নিউরোসার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যখন তিনি আহত হয়ে এখানে ভর্তি হন তখন তার অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। আমরা যখন তাকে দেখেছি, তখন অপারেশন করার মতো অবস্থায় তিনি ছিলেন না। আমরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে অপারেশন করার মতো একটা অবস্থায় নিয়ে আসি। তারপর তার অপারেশন করেছি।
তিনি বলেন, অপারেশনের পর প্রথমে তার ব্রেন ঠিক মতো কাজ করছিল না। প্রেসার ঠিক ছিল না। তবে দু-তিন দিনের মধ্যে তিনি একটু সুস্থ হলেও ডানপাশ কোনোভাবেই কাজ করছিল না। শরীরের ডান পাশে তার পাওয়ার (শক্তি) শূন্য ছিল। এক সপ্তাহ পর থেকে তিনি ধীরে ধীরে সুস্থ হতে শুরু করেন। শরীরের ডান পাশটা নাড়াতে শুরু করেন। এরপর বিগত প্রায় তিন সপ্তাহের চিকিৎসায় আল্লাহর রহমতে তিনি এখন ডান পাশ পুরোটাই নাড়াতে পারছেন এবং হাঁটতে পারছেন। একটু আগে তিনি হেঁটে অ্যাম্বুলেন্সে উঠেছেন। এখানে তার অপারেশনটা একশভাগ সাকসেসফুল হয়েছে বলে আমরা বলতে পারি।
ডা. জাহেদ বলেন, তার শারীরিক রিকভারির যা অবস্থা, তাতে আশা করা যায় দু-এক সপ্তাহের মধ্যে তিনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার ডিজ্যাবিলিটি থাকবে না ইনশাআল্লাহ। আমরা তাকে এক মাস পর ফলোআপে আসতে বলেছি।
গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ইউএনওর সরকারি বাসভবনে ঢুকে হামলা করে দুর্বৃত্তরা। ভেতরে ঢুকে ভারী ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং আঘাত করে ইউএনও ওয়াহিদাকে গুরুতর জখম করে তারা। এ সময় মেয়েকে বাঁচাতে এলে বাবা মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখকেও (৭০) জখম করে দুর্বৃত্তরা।
পরে তারা অচেতন হয়ে পড়লে মৃত ভেবে হামলাকারী পালিয়ে যায়। ভোরে স্থানীয়রা টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করেন।
ওয়াহিদাকে প্রথমে রংপুর এবং পরে রংপুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনা হয়। তারপর থেকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন ওয়াহিদা।