Bangladesh
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন বন্ধ করেছিল বাইরের চাপে : শেখ হাসিনা
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা, ২ মে ২০২৩ : বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালকদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির অভিযোগ এনে পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন বন্ধ করেছিল বাইরের চাপে।
সোমবার (০১ মে) স্থানীয় সময় সকালে ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক সদরদপ্তরে সংস্থাটির বোর্ড অব এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টরসদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক এক মতবিনিময় সভায় শেখ হাসিনা এ দাবি করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি হতাশ, বাইরের চাপের কারণে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর মতো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অর্থায়ন থেকে সরে এসেছিল।’
বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যকার অংশীদারিত্বের ভবিষ্যতের দিকে তাকানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন আমাদের অংশীদারিত্বের ভবিষ্যতের দিকে দেখতে চাই।’
বিশ্বব্যাংককে তার মূল উদ্দেশ্যের দিকে মনোযোগী থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিশ্বব্যাংককে অবশ্যই তার মূল উদ্দেশ্য দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়ন অর্থায়নের প্রতি মনোযোগী থাকতে হবে।’
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় বিশ্বব্যাংকের অংশীদারিত্বের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে বাংলাদেশে ১৫ বিলিয়ন ডলারের ৫৩টি বিভিন্ন প্রকল্প রয়েছে বিশ্বব্যাংকের। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাংকের দেওয়া ৩৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান এবং ঋণের অংশ।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সুযোগ এবং গ্রহণ করার ক্ষমতার ইঙ্গিত দেয়। বাংলাদেশ কখনো ঋণ পরিশোধে খেলাপি হয়নি বা তথাকথিত ‘ঋণের ফাঁদে’ পড়েনি।’
তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়ন ও প্রযুক্তি সম্পদ দিয়ে ৬.১ কিলোমিটার পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ আমাদের অর্থনৈতিক সক্ষমতার লক্ষণ।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার মধ্য দিয়ে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রেখেছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর হওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংক সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত ছিল।’
‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে জ্ঞানভিত্তিক ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার পরবর্তী লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। বিশ্বব্যাংকসহ আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের আমাদের ডিজিটাল এবং ভৌত অবকাঠামোতে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগ প্রচার-প্রচারণা এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আমরা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বিদ্বেষ নয়’ এই বৈদেশিক নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশ তার অর্থনৈতিক কূটনীতি অব্যাহত রাখবে।